প্রিয় কণ্ঠে আর সুর খেলবে না
জনপ্রিয় গায়ক জুবিন গর্গের নশ্বর দেহ রবিবারের সকালে গুয়াহাটির বিমানবন্দরে পৌঁছেছে। প্রিয় শিল্পীকে শেষবারের মতো দেখতে বিমানবন্দরে হাজার হাজার ভক্ত জড়ো হয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন একটু ভিডিও, তাতে দেখা যাচ্ছে, শহরের রাস্তা জুড়ে মানুষ হেঁটে চলেছেন শেষ একবার জুবিনকে ‘চোখের দেখা’ দেখতে।
দুটো দিন পেরিয়ে গিয়েছে, এখনও অনুরাগীদের পক্ষে বিশ্বাস করা যেন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, প্রিয় সেই কণ্ঠে আর সুর খেলবে না। গুয়াহাটির রাস্তায় মানুষের ঢল দেখে বোঝা যাচ্ছিল, শিল্পী শুধু গান নয়, তিনি হয়ে ওঠেন একটি পরিবারের অঙ্গ। দিল্লি থেকে আনা মরদেহ ঘিরে ভক্তরা চোখের জলে ভিজিয়ে দিলেন শেষ মুহূর্ত। কেউ মোমবাতি জ্বালালেন, কেউ নিঃশব্দে তাঁর প্রিয় গান গাইলেন।
জুবিনের অকালপ্রয়াণে অসম সরকার তিন দিনের রাজ্য শোক ঘোষণা করেছে। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী পবিত্র মার্গারিটা ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধা জানান কিংবদন্তিকে।
সকালে যখন নিথর দেহ বিমানবন্দরে এসে পৌঁছয়, উপস্থিত ছিলেন জুবিনের স্ত্রী গরিম সৈকিয়া গর্গ এবং রাজ্য সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ফুলে সাজানো একটি অ্যাম্বুলেন্সে তার দেহ ভিআইপি এক্সিট দিয়ে বাইরে আনা হয়।
বিমানবন্দরের বাইরে ভক্তরা গান গাইতে গাইতে এবং “জয় জুবিন দা” স্লোগান দিতে দিতে অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে চলতে থাকেন। অনেকে চোখের জল আটকালেও বলতে শোনা যায়, “কেন এত তাড়াতাড়ি চলে গেলেন জুবিন দা?” অনেকের হাতে ছিল জুবিনের প্রতিকৃতি এবং ঐতিহ্যবাহী অসমীয়া ‘গামোসা’, যেখানে লেখা ছিল “JG Forever।”
গুয়াহাটি পুলিশের মহাপরিচালক এবং কমিশনাররা পথ পরিষ্কার করতে অ্যাম্বুলেন্সের সামনে হেঁটেছিলেন। শোকযাত্রায় জুবিনের প্রিয় খোলা জিপও ছিল, যা তিনি প্রায়ই অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করতেন। জিপের সামনে তার বিশাল প্রতিকৃতি এবং সঙ্গে থাকা বাদ্যশিল্পীরাও উপস্থিত ছিলেন।
রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ প্রিয় শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গুয়াহাটিতে এসেছেন। তিন দশক ধরে ৪০টিরও বেশি ভাষা ও উপভাষায় ৩৮ হাজার গান গেয়ে তিনি দর্শককে মুগ্ধ করেছেন।