মোহন ভাগবতের মতে এটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র
বাবরি মসজিদ (Babri Masjid) ফের নতুন করে রাজ্য ও জাতীয় রাজনীতির একটা ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। তৃণমূল (TMC) থেকে বহিস্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Suspended MLA Humayun Kabir) মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গায় একটি মসজিদ (Mosque) নির্মাণ করতে চলেছেন, যে মসজিদকে তিনি বলছেন বাবরি মসজিদ। এই মসজিদ নির্মাণ নিয়েই রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত জানিয়ে দিলেন যে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই তৈরি করা হচ্ছে।
রবিবার আরএসএস-এর শতবর্ষ (RSS 100 Years) উপলক্ষে শহরের এক প্রেক্ষাগৃহে উপস্থিত ছিলেন সংঘ প্রধান মোহন ভাগবত (Mohan Bhagwat)। সেখানেই দ্বিতীয় অর্ধের প্রশ্নোত্তর পর্বে এক প্রশ্নের উত্তরে মোহন ভাগবত বলেন, "একটা ঝগড়া চলেছিল কোর্টে। দীর্ঘদিনের শুনানির পর আদালত একটা সিদ্ধান্ত জানায়। যার ফলে মন্দির-মসজিদ ঝগড়ার সমাপ্তি হয়েছিল।" এরপরেই হুমায়ুনের প্রস্তাবিত মসজিদ নিয়ে সংঘচালক বলেন, "ফের মসজিদ (বাবরি) নির্মাণের এই সিদ্ধান্ত হিন্দু-মুসলমানের ঝগড়াকে সামনে নিয়ে আসবে।" ভাগবতের সংযোজন, এই সিদ্ধান্ত না মুসলিমদের জন্য ভাল, না হিন্দুদের জন্য ভাল। তাঁর বক্তব্য, "এটা একটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। এমনটা হওয়া উচিৎ ছিল না বলেই আমি মনে করি।"
এদিন মোহন ভাগবত (Mohan Bhagwat) আরও বলেন ধর্মনিরপেক্ষতা আর হিন্দুত্ব এক নয়। ভারতে যারাই সরকার চালিয়ে এসেছে তারাই অসাম্প্রদায়িক থেকেছে। ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ হল নিরপেক্ষতা বজায় রাখা। তিনি আরও বলেন, "আমরা এটা মানি যে মুসলিম সম্প্রদায় পুজার বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করতে পারেন কিন্তু দেশের ভালর বিষয়ে তারা সবাইই দেশের পক্ষে।"
অন্যদিকে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অস্থিরতা ও তার প্রভাব নিয়েও একাধিক প্রশ্ন ওঠে। শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari), কাজী মাসুম আখতার ও খগেন মুর্মুর মতো ব্যক্তির প্রশ্নের উত্তরে মোহন ভাগবত বলেন, এই পরিস্থিতির প্রভাব যে পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) পড়ছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। তাঁর বক্তব্য, সীমান্ত খোলা থাকবে কি না, সে সিদ্ধান্ত সরকারের। তবে সীমান্ত খোলা থাকলে কে ঢুকছে, কীভাবে ঢুকছে - তার দায়ও সরকারকেই নিতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের (Minority Hindus) নিপীড়ন প্রসঙ্গে সংঘপ্রধান বলেন, ভারতের হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। একই সঙ্গে তাঁর মত, শুধু ভারত নয়, বিশ্বের সর্বত্র হিন্দু সমাজেরই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন বাংলার রাজনৈতিক মানচিত্র বদলাবে কিনা - এই প্রশ্নে সরাসরি কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করেননি ভাগবত। বরং তিনি বলেন, রাজনৈতিক পরিবর্তন আনার দায়িত্ব ভোটারদেরই (Voters)। তাঁর কথায়, রাজনীতি নয়, সমাজ পরিবর্তন নিয়েই ভাবেন তিনি। রাজ্যে পরিবর্তন হবে কি না, তা জনগণই ঠিক করবেন।