‘সব বলব কিন্তু জয় বাংলা বলব না’, বাংলার অস্মিতার লড়াইয়ে খড়্গপুরে বিতর্ক উসকে দিলেন দিলীপ |
বর্ষায় মৃত্যুপুরী হিমাচল! ধস-বন্যায় একমাসে মৃত ১১৬, রাজ্যে আর্থিক ক্ষতি ১,২৩০ কোটি টাকার
বর্ষায় মৃত্যুপুরী হিমাচল
হিমাচল প্রদেশে এ বছর বর্ষা যেন 'মৃত্যুর দূত' হয়ে এসেছে। মাত্র এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে (Monsoon kills 116 in Himachal Pradesh within a month) রাজ্যজুড়ে মৃত্যু হয়েছে ১১৬ জনের। ২০ জুন থেকে ১৮ জুলাই- এই ২৮ দিনে কতগুলি মৃত্যু? সেই পরিসংখ্যান সামনে এনেছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর (SDMA)।
তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা, মেঘভাঙা বৃষ্টি, ভূমিধস, বাজ পড়ে (Rain-related fatalities) ৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি ৪৮ জন মারা গিয়েছেন সড়ক দুর্ঘটনায়, যার বেশিরভাগই ঘটেছে পিচ্ছিল রাস্তা ও ধস নামা ঢালু জায়গায়। পরিসংখ্যান থেকে আরও জানা গিয়েছে, হঠাৎ বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ জন, মেঘভাঙা বৃষ্টিতে মৃত্যু ১৪ জনের, জলে ডুবে প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। ভূমিধসে মৃত ১ এবং পাথর পড়ে বা সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের।
বর্ষায় পাহাড়ি রাস্তাগুলি হয়ে উঠেছে মৃত্যুফাঁদ। ঢালু জায়গায় বৃষ্টি পড়ে রাস্তা ভিজে যায়, অনেক সময় মাটি ধসে পড়ে (Foding and road blockages)। এরফলে বেড়ে যায় গাড়ি উল্টে পড়ার মতো দুর্ঘটনার সংখ্যা। গত একমাসে কেবল সড়ক দুর্ঘটনাতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৪৮ জন। এরমধ্যে সোলান (৮), কুলু (৭), চম্বা (৬), শিমলায় (৪) মৃত্যু সবথেকে বশি।
জেলার নিরিখে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মান্ডি, এখানে গত একমাসে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরপরই আছে কাংড়া (১৬) ও কুলু (৭)। বন্যা ও ধসের কারণে বহু জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। রাস্তাঘাট বন্ধ, সেতু ধসে পড়েছে, বহু গ্রাম কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মূল শহর থেকে।
বিপর্যয়ের প্রভাব পড়েছে রাজ্যের আর্থিক পরিকাঠামোর উপরেও। এসডিএমএ-র রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্ষাজনিত দুর্যোগে এখনও পর্যন্ত আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। সরকারি সম্পত্তি, ঘরবাড়ি, কৃষিজমি এবং গবাদিপশুর বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের উদ্দেশে প্রশাসনের তরফে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
- অপ্রয়োজনীয় যাতায়াত একেবারে বন্ধ রাখতে হবে।
- বিপজ্জনক ঢালু এলাকায় প্রবেশ করা যাবে না।
- সরকারি নির্দেশিকা ও সতর্কবার্তা মেনে চলতে হবে।
উদ্ধার ও পুনর্বাসনের কাজ চলছে জোরকদমে। এনডিআরএফ (NDRF), এসডিআরএফ (SDRF), হোমগার্ড এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় উদ্ধারকাজে নেমেছে একাধিক দল।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, আগামী দিনগুলোতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা। হিমাচলের এই সংকটময় পরিস্থিতি কেবল প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, মানবিক বিপর্যয় বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাই এখনই সাবধান না হলে ভবিষ্যতে আরও বড় বিপদ ঘটতে পারে বলেই মনে করছেন তাঁরা।