২ বছর চাপা থাকার পর নতুন জল হাইকোর্টে
দক্ষিণেশ্বর মন্দির কি পাবলিক প্রপার্টি, নাকি পার্সোনাল প্রপার্টি? এই প্রশ্নে নতুন করে বিচার শুরু হল কলকাতা হাইকোর্টে। দীর্ঘদিন নানা প্রশ্নে মামলা ঝুঁলে থাকার পর এবার এই প্রশ্নে নতুন করে মামলার শুনানি শুরু হল হাইকোর্টে। এর আগে জনস্বার্থ মামলা, ট্রাস্টি কমিটির নির্বাচন, আর্থিক অনিয়ম-সহ নানা অভিযোগে দায়ের মূল মামলা ২০২২ সালে শুরু হলেও শুনানি শুরু করেও গত প্রায় দু বছর চাপা পড়ে গিয়েছিল।
এবার দক্ষিণেশ্বর মন্দির সংক্রান্ত যাবতীয় মামলা পাঠানো হলো বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও বিচারপতি সুপ্রিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। ১৭ ডিসেম্বর মূল মামলার শুনানি শুরু হবে। তার আগে কেন্দ্র ও রাজ্যকে নোটিস পাঠানোর নির্দেশ। এর আগের হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে কেন্দ্র ও রাজ্যকে আগামী শুনানিতে রিপোর্ট জমা দিয়ে জানাতে হবে, দক্ষিণেশ্বর মন্দির ট্রাস্টকে তারা কোনও আর্থিক অনুদান দিয়েছে কি না।
দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ট্রাস্টির ভুয়ো নির্বাচন করে একটানা ৫০ বছর ধরে সম্পাদক পদে রয়েছেন একজনই। এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন মন্দিরের সেবাইতদের একাংশ। ২৫০ বছরের পুরনো মন্দিরের ওই সেবাইতদের অভিযোগ, ট্রাস্টির মিটিং ছাড়াই ভুয়ো নির্বাচন হচ্ছে। ফলে মন্দিরের টাকার হিসেব সম্পর্কে অন্ধকারে রয়েছেন সেবাইতরা। বর্তমান সম্পাদক কুশল চৌধুরীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তাঁরা।
জানা যাচ্ছে, ১৮৭২ সালে রানি রাসমণি তাঁর আটজন নাতির জন্য একটি অর্পণ নামা তৈরি করেছিলেন। আটজন নাতির অবর্তমানে তাঁদের ছেলেরা সেবাইত হবেন এবং তাঁরাই দক্ষিণেশ্বরের দায়িত্ব পাবেন, এমনই বলা হয়েছিল। যদিও রানিমার বড় নাতি বলরাম দাস হাইকোর্টে একটি মামলা করে জানতে চান, অর্পণ নামা কী ভাবে পরিচালনা হবে? তার জন্য স্কিম করার আবেদনও জানান তাঁরা।
১৯২৯ সালে আদালত নির্দেশ দেয় সেবাইত কারা, তা নিয়ে ভোট করতে হবে। পরবর্তী সময় ১৯৭২ সালে আশুতোষ দাস নামে এক সেবাইত তৎকালীন ট্রাস্টি বোর্ডের বিরুদ্ধে মামলা করে টাকা তছরুপের অভিযোগ আনেন। তাঁর মামলায় তিন বছর অন্তর ট্রাস্টি বোর্ডের নির্বাচনের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
পরে ২০২১ সালে ফের নির্বাচন করতে চেয়ে ফের আদালতে আসে ট্রাস্টি বোর্ড। বিচারপতি শেখর ববি শরাফ হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যকে স্পেশাল অফিসার হিসেবে নিয়োগ করেন। কারা নির্বাচনে ভোট দেবেন তাঁদের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়। সেই তালিকা চাইলেও তথ্য দেওয়া হয়নি। এতদিন সেই মামলা ঝুলে ছিল। এবার সেই মামলা নতুন করে শুনানি শুরু হচ্ছে।