১০ কেজি সোনার গয়নায় সেজে উঠবে কৃষ্ণনগরের 'বুড়িমা'
প্রতিবছর অক্টোবরের শেষের দিকে কৃষ্ণনগর শহর সেজে ওঠে উৎসবের আলোয়। এখানকার বিখ্যাত 'বুড়িমা'র পুজো (Krishnanagar Burima Puja) এবারও ভক্তদের আবেগ ও উচ্ছ্বাসে শুরু হচ্ছে। শতাব্দী প্রাচীন এই পুজোকে ঘিরে শহরের রাস্তা, রাজবাড়ি ও চাষাপাড়া এলাকায় ভক্তদের সমাগম চোখে পড়ার মতো। তাঁদের বিশ্বাস, বুড়িমার কাছে কিছু চাইলে তিনি নাকি ফিরিয়ে দেন না, আর সেই আশায় প্রতি বছর হাজার হাজার ভক্ত পুজো দিতে আসে।
কথিত আছে, কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরে শহরে বুড়িমার পুজো শুরু হয়েছিল। তবে এর আগে বাংলায় দেবীর পুজো হত কি না, তা নিয়ে রয়েছে কিছু দ্বিমত। চাষাপাড়ার বুড়িমার পুজোর শুরু ১৭৭২ সালে। অনেকের মতে, রাজা স্বপ্নাদেশ পেয়ে চাষাপাড়ার লেঠেলদের পুজোর দায়িত্ব দেন। আবার কেউ বলেন, রাজা চাইতেন দেবীর পুজো রাজবাড়ির বাইরে ছড়িয়ে পড়ুক। পুজোর শুরু নিয়ে মত ভিন্ন হলেও ভক্তদের বিশ্বাসে বুড়িমার মাহাত্ম্য অটুট।
জানা গেছে, বুড়িমাকে সাজানো হবে ২৯ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায়, ১০ কেজি সোনার অলঙ্কার দিয়ে। ভোররাতে প্রায় ৪টা নাগাদ মঙ্গলঘটে জল ভরে পুজো শুরু হবে (Burima Puja 2025 schedule)। একই দিনে বেলা ১২টা থেকে মানসিক দ্রব্যাদি দেওয়া হবে। পরের দিন, ৩০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ৪৪ মিনিটে সপ্তমীর পুজো শুরু হবে। সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে হবে পুষ্পাঞ্জলি, ১০টা ৩০ মিনিটে অষ্টমীর পুজো, দুপুর ১২টায় পুষ্পাঞ্জলি। দুপুর ১টা নাগাদ নবমীর পুজো, ২টো ৩০ মিনিটে নবমীর পুষ্পাঞ্জলি এবং ৩টেয় বলিদান হবে। বিকেল ৪টের দিকে পুজোর আরতি ও হোম অনুষ্ঠিত হবে (Burima Puja rituals)। সন্ধ্যা ৬টায় আরতির অনুষ্ঠান শেষ হবে।
৩১ অক্টোবর শুক্রবার সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে দশমীর পুজো শুরু হবে। বিকেল ৪টেয় দেবীকে আসন থেকে নামানো হবে। ভোগপ্রসাদ বিতরণ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত নির্দিষ্ট স্থানেই করা হবে।
পুজোর শেষে দেবীকে রাজবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং কাঁধে বহন করে জলঙ্গিতে বিসর্জন দেওয়া হয়। রাস্তার ধারে ভক্তরা এই মহাজাগরণের দৃশ্য দেখতে ভিড় জমায়। পুজো কমিটি আশা করছে এবারের উৎসবে লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হবে।