জিন্স-শার্টে শপথ নিয়েছিলেন!
গত বৃহস্পতিবার সকালে বিহারের (Bihar) পাটনার গান্ধী ময়দানে দশমবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন নীতীশ কুমার (Nitish Kumar)। সেই মঞ্চের চারিদিকে এনডিএ-র (NDA) নবনির্বাচিত বিধায়করা ঝকঝকে কুর্তা, পাজামা, ধুতিতে সেজে শপথ নিয়েছেন। তবে সেই ভিড়ের মধ্যে হঠাৎ নজর কাড়েন এক যুবক। তাঁর পরনে ছিল জিন্স, শার্ট।
সাধারণ ভঙ্গি, তবু তিনি সরাসরি গিয়ে অভিবাদন জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Narendra Modi)। তারপর শপথ নেন মন্ত্রী হিসেবেও! স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন, এই যুবক কে?
সোশ্যাল মিডিয়ায় মুহূর্তেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন তিনি। এই যুবকের নাম দীপক প্রকাশ (Deepak Prakash)। এনডিএ সহযোগী দল রাষ্ট্রীয় লোক মরচা (RLM) প্রধান উপেন্দ্র কুশওয়াহা ও বিধায়ক স্নেহলতা কুশওয়াহার ছেলে। ৩৬ বছরের দীপক নিজে কোনও কেন্দ্রে ভোটে দাঁড়াননি, জয় তো দূরের কথা। অথচ নীতীশ কুমারের নতুন মন্ত্রিসভায় তিনি সরাসরি জায়গা করে নিয়েছেন।
কেন দীপক?
দলের ছ'টি আসনের লড়াইয়ে চারটিতে জয় পায় আরএলএম (RLM)। ধারণা করা হচ্ছিল, জয়ী প্রার্থী স্নেহলতা কুশওয়াহাই মন্ত্রিত্ব পাবেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সমীকরণ বদলে যায়। দীপক নিজেই জানিয়েছেন, শপথ নেওয়ার কয়েক মুহূর্ত আগে তিনি জানতে পারেন যে মন্ত্রিত্ব তাঁর ঝুলিতে আসছে। সিদ্ধান্ত হয়েছিল দলের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে, তাঁর বাবা উপেন্দ্র কুশওয়াহার উপস্থিতিতেই।
এখন প্রশ্ন উঠছে, নীতীশ কুমার কিংবা অমিত শাহ কি এই পছন্দে প্রথমে রাজি ছিলেন? সূত্রের দাবি, দু’জনেরই আপত্তি ছিল। শেষ মুহূর্তে নাম চূড়ান্ত হয় উপেন্দ্র কুশওয়াহার জোরালো উদ্যোগেই। ফলত, বিহারের রাজনৈতিক মহলে নতুন বিতর্ক - একি রক্তের টানে মন্ত্রিত্ব? বিরোধীদের কটাক্ষ, আবারও রাজ্যে প্রমাণিত হল ‘পারিবারিক রাজনীতি’।
আইটি কর্মী থেকে মন্ত্রী
২০১১ সালে মণিপালের এমআইটি (Manipal MIT) থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে বি টেক (B-tech) করার পর চার বছর আইটি-খাতে কাজ করেছেন দীপক। তাঁর কথায়, ছোটবেলা থেকেই বাবার রাজনৈতিক কর্মজীবন কাছ থেকে দেখেছেন। গত চার-পাঁচ বছর ধরে তিনি সক্রিয়ভাবে দলের কাজের সঙ্গে যুক্ত।
শপথের দিন তাঁর পোশাক নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই দীপকের জবাব, “রাজনীতি সাধারণ মানুষের কাছে যত সহজবোধ্য হবে, গণতন্ত্র তত শক্তিশালী হবে। আমি আরামদায়ক পোশাকই পরব, আগামী পাঁচ বছরও তাই থাকবে। পরে কুর্তা-পাজামা পরব কি না, সময় বলবে।”