মেসিকে দাঁড় করিয়ে অজয় দেবগন, টাইগার শ্রফকে সংবর্ধনা, ওয়াংখেড়েতে জনতার ‘রোষে’ দুই অভিনেতা |
'আবার আসিব ফিরে...', সফরের অন্তিম দিনে ভারতবাসীকে কথা দিয়ে রাখলেন মেসি
সফরের অন্তিম দিনে ভারতবাসীকে কথা দিয়ে রাখলেন মেসি
'আবার আসিব ফিরে'। তবে এক্ষেত্রে ধানসিঁড়ি বা জীবনানন্দ দাশের কোনও উপাখ্যান নয়। কথাগুলো বলছিলেন কিংবদন্তি মেসি (Messi In Delhi)। পদ্যের মতো শুনতে না লাগলেও রাজধানীর কুয়াশার বুকে দাঁড়িয়ে ফুটবল রাজপুত্রের প্রতিটা বাক্য যেন এক একটা কবিতার মতো। গ্যালারি ভর্তি দর্শকদের উদ্দেশে লিও (Lionel Messi) জানালেন, "ফিরে যাচ্ছি, তবে আমরা অবশ্যই আবার আসব।"
সোমবার বিকেলে অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে (Arun Jaitley Stadium) পা রাখতেই লিওনেল মেসির (Lionel Messi) ভারত সফরের ‘শেষ লেগ’-কে কেন্দ্র করে ধরা পড়েছিল উত্তেজনা, প্রতীক আর সৌজন্যের মিলন। গায়ে পিঙ্ক রঙের টি-শার্ট, চিরচেনা হাসি— দিল্লিতে ‘গোট’ (GOAT) ছিলেন পরিচিত মেজাজে।
দিল্লি সফরের অন্যতম আলোচিত মুহূর্ত আইসিসি চেয়ারম্যান (ICC Chairman) জয় শাহের (Jay Shah) সঙ্গে মেসির মোলাকাত। সঙ্গে ছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা (Rekha Gupta) ও ডিডিসিএ সভাপতি রোহন জেটলি (Rohan Jaitley)।
সৌজন্য সাক্ষাৎ হলেও প্রতীকী গুরুত্ব স্পষ্ট। শাহ লিও-র হাতে তুলে দেন ‘মেসি ১০’ লেখা টিম ইন্ডিয়ার (Team India) জার্সি— ফুটবল আর ক্রিকেটের দুই আইকনিক মিলন। এ ছাড়া হাতে এল বিশেষ স্বাক্ষরিত ক্রিকেট ব্যাট-ও। শুধু তাই নয়, আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (T20 World Cup) আমন্ত্রণপত্রও উপহার দেন জয় শাহ। যার সুবাদে ভারতের ক্রীড়া প্রশাসন ও আন্তর্জাতিক ফুটবলের সংযোগ আরও দৃঢ় হল বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞদের বড় অংশ।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে এসে হাতে মাইক তুলে নেন মেসি। শুরুটাই করলেন এই ভাবে, "ভারত সফরের অভিজ্ঞতাটা এতটাই ভাল, কিন্তু আক্ষেপ একটাই, সময়টা বড্ড কম।"
ওদিকে ভরা মাঠে একটাই চিৎকার, মেসি মেসি। এদিকে লিও বলে চললেন, "এত ভালবাসা পাওয়া সত্যিই অসাধারণ ছিল। হ্যাঁ, আমরা জানি যে এই ভালবাসা নতুন নয়, সবসময়ই ছিল, কিন্তু প্রত্যক্ষভাবে অনুভব করা— উফ, অবিশ্বাস্য।"
মেসি বলেন, "গত কয়েক দিনে সবাই আমাদের জন্য যা করেছেন, তা একেবারেই অবাক করে দেওয়ার মতো। তাই আমরা সবার ভালবাসা সঙ্গে করেই ফিরে যাচ্ছি। আর হ্যাঁ, অবশ্যই আবার ফিরব। হয়তো কোনও একদিন ম্যাচ খেলতে, কিংবা অন্য কোনও উপলক্ষে। কিন্তু নিশ্চিতভাবেই আবার ভারত সফরে আসব। আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।"
দিল্লি-পর্বে ছিল নির্দিষ্ট সূচি—লীলা প্যালেসে (Leela Palace) আসা, বাছাই অতিথিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, স্টেডিয়াম ইভেন্ট, ‘পুরানা কেল্লা’য় (Purana Qila) ফটোশুট। সব মিলিয়ে পরিকল্পিত, নিয়ন্ত্রিত আয়োজন। কলকাতার বিশৃঙ্খলার স্মৃতি মাথায় রেখে দিল্লিতে প্রশাসনিক প্রস্তুতি ছিল চোখে পড়ার মতো—ক্ষমতার কেন্দ্র, ক্রীড়া প্রশাসন আর তারুণ্যের মাঠ এক ফ্রেমে।
চার শহরের সফর আজ শেষ। হায়দরাবাদ, মুম্বইয়ের পর অন্তিম দিনে দিল্লিও দেখাল, কীভাবে আইকনকে সম্মান জানাতে হয়। আর কলকাতা?