অবসর নিচ্ছে MiG-21
কেউ বলত ‘উড়ন্ত কফিন’। কেউ বলে ‘উড়ন্ত যুদ্ধাশ্ব’। যে যাই বলুক, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের তৈরি MiG-21 যুদ্ধবিমানই ১৯৬৫, ১৯৭১, কারগিল, বালাকোট এয়ারস্ট্রাইক এমনকী হালের অপারেশন সিঁদুরেও পাকিস্তানের মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছিল। ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষায় যে বিমান গত ছয় দশক ধরে অক্লান্ত কাজ করে কিংবদন্তি হয়ে গিয়েছে। ৬২ বছর পর সেই MiG-21 যুদ্ধবিমান ভারতীয় বিমানবাহিনী থেকে অবসর নিতে চলেছে।
আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর চণ্ডীগড় বিমানঘাঁটিতে ২৩ স্কোয়াড্রন (প্যান্থার্স) MiG-21 কে শেষ বিদায় জানাবে। এই অবসরক্ষণকে স্মরণীয় করে রাখতে একটি বিশেষ বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বিমানবাহিনী। ১৯৬২ সালে ভারতীয় বিমানবাহিনীতে কাজে যোগ দেয় MiG-21। বর্তমানে ভারতের হাতে ২ স্কোয়াড্রন MiG-21-এর বাইসন নামের উন্নত প্রযুক্তির বিমান আছে।
এই যুদ্ধবিমানের অনেক আগেই কর্মজীবন শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি করার কারণ হল, তেজস Mk1A বিমানের সরবরাহে দেরি হওয়া। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের বালাকোট এয়ারস্ট্রাইকের সময় উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান এই MiG-21-এর বাইসন ভার্সন নিয়েই পাকিস্তানের এফ-১৬-র মোকাবিলা করেছিলেন। এখন কেবলমাত্র বাইসন ভার্সনই ব্যবহার করা হয় বিমানবাহিনীতে।
সোভিয়েতের মাইকোয়ান-গুরেভিচ ব্যুরোর তৈরি এই যুদ্ধবিমান বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংঘর্ষে রক্ষাকর্তার ভূমিকা নিলেও শেষের দিকে প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহার করা হতো MiG-21কে। এবং দফায় দফায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ভেঙে পড়ায় একে উড়ন্ত কফিন নাম দেওয়া হয়। ভারতের প্রথম শব্দের চেয়ে দ্রুতগামী এই জেট বিমান ছিল প্রায় ৮৭০টি। প্রায় ৬০টি দেশ বিভিন্ন সময় ১১,০০০ MiG-21 ব্যবহার করেছে। এবার MiG-21-এর অবসর নেওয়ায় ভারতীয় বিমানবিহানীর যুদ্ধবিমানের সংখ্যা কমে হবে ২৯ স্কোয়াড্রন। ১৯৬০ সালের থেকেও যা কম, এমনকী ১৯৬৫ সালের ভারত-পাক যুদ্ধের সময়ের থেকেও কম।