টানা প্রধানমন্ত্রিত্বে ইন্দিরার রেকর্ড ভেঙে দ্বিতীয় স্থানে মোদী
২৫ জুলাই, শুক্রবার নরেন্দ্র মোদীর জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে একটানা দায়িত্বপালন শুক্রবার ৪০৭৮তম দিন তাঁর। এর আগে ইন্দিরা গান্ধী (Late Prime Minister Indira Gandhi) টানা ৪০৭৭ দিন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। প্রথম স্থানটি তাঁর পিতা প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর (First Prime Minister Late Jawaharlal Nehru) দখলে। ১৬ বছর ২৮৬ দিন টানা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা কন্যা ইন্দিরার রেকর্ড শুক্রবার ছাপিয়ে গেলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। ৭৪ বছর বয়সি নরেন্দ্র মোদী কি প্রথম প্রধানমন্ত্রীর রেকর্ড ছাপিয়ে যেতে পারবেন?
ইন্দিরা গান্ধী দু’দফায় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। প্রথম দফায় ১৯৬৬ সালের ২৪ জানুয়ারি থেকে ১৯৭৭-এর ২৪ মার্চ পর্যন্ত একটানা দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন নেহরু কন্যা। সেই দফায় টানা মোট ৪ হাজার ৭৭ দিন প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি তাঁর দখলে ছিল। ওই পর্বে জাতীয় রাজনীতি ছিল উত্তপ্ত। সরকার প্রধান ও দলীয় সভাপতি পদ নিয়ে কংগ্রেসের অভ্যন্তরে প্রবীণ ব্রিগেডের বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন। এই পর্বেই ‘গরিবি হটাও’ কর্মসূচি ঘোষণা, ব্যাঙ্ক, বিমা কোম্পানির জাতীয়করণের পাশাপাশি ১৯৭১-এ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিজয়ের সুবাদে ইন্দিরা হয়ে উঠেছিলেন জনপ্রিয় নেত্রী। সেই তিনিই জরুরি অবস্থা জারি করে রাতারাতি ভিলেন বনে যান। ক্ষমতাচ্যুত হন ১৯৭৭-এর নির্বাচনে।
দ্বিতীয় দফায় ১৯৮০-র ১৪ জানুয়ারি থেকে ১৯৮৪-এর ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ১৯৮৪-র ৩১ অক্টোবর তাঁর মৃত্যদিনও বটে। ওইদিন নিজের সরকারি বাড়িতে দেহরক্ষীদের গুলিতে নিহত হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী।
প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহললাল নেহরু ওই পদে ছিলেন ১৯৪৯-এর ১৫ অগস্ট থেকে ১৯৬৪-র ২৭ মে। পদে থাকাকালে মারা যান তিনি। ১৯৬৪-র ২৭ মে সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন নেহরু।
প্রধানমন্ত্রী নেহরুর দীর্ঘ ইনিংস কি নরেন্দ্র মোদী ভাঙতে পারবেন? মোদীর চলতি মেয়াদ সরকারিভাবে শেষ হবে ২০২৯-এর মে মাসে। তখন প্রধানমন্ত্রী পদে তাঁর মেয়াদ পনেরো বছর পূর্ণ হবে। নেহরুর রেকর্ড ছুঁতে হলে তাঁকে চতুর্থবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। সেই সুযোগ তিনি পাবেন কি না, এখনই তা বলা মুশকিল। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মোদীর বয়স ৭৫ হবে। বিজেপি-আরএসএস-এ অলিখিত নিয়ম আছে ৭৫-এর পর গুরুত্বপূর্ণ পদে না থাকা। আরএসএস প্রধান মোহন ভাহগবও সেপ্টেম্বরে ৭৫-এ পা দেবেন। তিনি তারপর সরে যাবেন, এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। মোদী কোনও আভাস দেননি। এই সংক্রান্ত আলোচনায় অমিত শাহ মন্তব্য করেছেন, মোদীজি ২০২৯-এর লোকসভা ভোটেও বিজেপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হবেন।