অমিত শাহকে ফোন করে রিপোর্ট নিলেন মোদী, ঘটনার তদন্তভার পেল এনআইএ |
মঙ্গলে মুক্তি পার্থর, সাসপেনশন কি তুলে নেবে তৃণমূল?
সাসপেনশন কি তুলে নেবে তৃণমূল?
তিন বছর সাড়ে তিন মাস পর অবশেষে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিনে মুক্তি পেতে চলেছেন প্রাক্তন শিক্ষা ও শিল্প মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee bail)। মঙ্গলবার, ২১ কার্তিক বাড়ি ফিরবেন ‘কাতু’ (পাড়ায় ওই নামেই পরিচিত)। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, হাসপাতালে বসে রবিবার থেকেই নাকি পঞ্জিকা দেখা শুরু করেছেন পার্থ।
সে তিনি করুন। তবে সবচেয়ে কৌতূহলের বিষয় হল, পার্থর উপর থেকে কি সাসপেনশন তুলে নেবে তৃণমূল? বেহালা পশ্চিমেরই বা ভবিষ্যৎ কী?
২০২২ সালের ২৩ জুলাই নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। একই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছিল পার্থর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। অর্পিতার টালিগঞ্জের ফ্ল্যাট ও আরও একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল সোনা ও নগদ মিলিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
পার্থ গ্রেফতার হওয়ার ৫ দিন পর সাংবাদিক বৈঠক করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তাঁকে সাসপেন্ড করছে দল। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারলে তবেই দল ফেরত নেবে।
ঘটনা হল, পার্থ জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু এখনও নির্দোষ প্রমাণিত হননি। বরং তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করেছে ইডি ও সিবিআই। সেই সব মামলার শুনানি চলছে।
কালীঘাটের ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, পার্থর সাসপেনশন প্রত্যাহারের কোনও প্রশ্নই নেই। হিসাব মতো, এখনও তিনি বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক। তাই চাইলে তিনি বেহালায় ঘুরে বেড়াতেও পারেন। বিধায়ক হিসাবে তাঁর সেই অধিকার রয়েছে। উনি বিধানসভাতেও যেতে পারেন। কিন্তু দলের স্থানীয় নেতা কর্মীরা তাঁর সঙ্গে থাকবেন কিনা সন্দেহ রয়েছে।
কালীঘাটের ঘনিষ্ঠ ওই নেতার কথায়, যতদূর বেহালা পশ্চিমের প্রশ্ন, সাসপেনশন প্রত্যাহার না হলে পার্থকে ওই আসন থেকে আর প্রার্থী করার প্রশ্নও নেই। সেই দেওয়াল লিখন এখনই স্পষ্ট। শুধু পার্থ নন, মানিক ভট্টাচার্যের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। পলাশিপাড়া বিধানসভা থেকে মানিক ভট্টাচার্যকেও আর সম্ভবত প্রার্থী করবে না তৃণমূল।
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায় যেমন গ্রেফতার হয়েছিলেন, তেমনই রেশন দুর্নীতি মামলায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তথা বালু মল্লিককে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু পার্থর মতো অনুব্রত বা বালু কাউকেই তৃণমূল সাসপেন্ড করেনি। সেই কারণে তিহাড় থেকে মুক্তি পাওয়ার পর অনুব্রত সাংগঠনিক দায়িত্ব পেয়েছেন। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে কোনও সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়নি ঠিকই। তবে দলের কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন বালু।
প্রশ্ন উঠতে পারে, পার্থ ব্যতিক্রম কেন? তৃণমূলের কালীঘাট ঘনিষ্ঠ এক প্রবীণ নেতার কথায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কারণে দল যে পরিমাণ বেইজ্জত হয়েছে, তা আরও কারও জন্য হয়নি। তাঁর মহিলা ঘটিত সম্পর্ক, বিপুল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, বান্ধবীর ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনা তৃণমূলের বিস্তর ক্ষতি করেছে। রাজ্যের মানুষের চোখে এখনও সেই টাকার পাহাড়ের ছবি ভাসছে। আর কারও ক্ষেত্রে ইডি বা সিবিআই এ ধরনের কোনও প্রমাণ পেশ করতে পারেনি। সবটাই অভিযোগের স্তরে রয়েছে।