স্মৃতী সৌধ
আশিস মণ্ডল, বোলপুর, ২৭ জুলাই : ঠিক পঁচিশ বছর আগে ভূমিহীন ক্ষেত মজুরদের নৃশংস গনহত্যার ঘটনা ঘটেছিল নানুরে। এই ২৭ জুলাই ১১ জনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করে সিপিএমের হার্মাদ বাহিনী। এই দিনটিতে শহীদের স্মরণ করতে বাসাপাড়ায় উপস্থিত ছিলেন আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক, পুর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যের ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প দফতর ও কারা দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, জেলা সভাধিপতি কাজল সেখ, অসিত মাল, সৈয়দ সিরাজ জিম্মি প্রমুখ। তবে অনুষ্ঠানে অনুব্রত মণ্ডলকে দেখা যায়নি।
২৭ জুলাই শহীদ দিবসের এই দিনটিতে নৃসংশতার বলি হন সেখ নিজাম, রসুল বক্স, সেখ সবুর, সেখ সালামত, সেখ হারাই, সরণ মেটে, সেখ সফিকুল, সেখ শফিক, সেখ আশরাফ, সেখ সাইফুর ও সেখ আলি হোসেন প্রমুখ। ২০০০ সালে ১১ জনকে হত্যার পরই সোজা দিল্লি থেকে নানুরে ছুটে এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কয়েক বার এই দিনে নানুরে এসে শহিদ-তর্পণ করেন তিনি। তবে ক্ষমতায় আসার পর আর নানুরের শহীদ সমাবেশে আসেননি মমতা। মুখ্যমন্ত্রী এদিন সন্ধ্যায় বীরভূমে পা রাখেন।
রবিবার নানুরের বাসা পাড়ায় শহীদ বেদীতে মাল্যদানের মধ্য দিয়ে পালিত হয় নানুর শহীদ দিবস। প্রায় কয়েক হাজার মানুষ হাজির ছিলেন বাসাপাড়ার এই শহীদ সভায়। শহীদদের তালিকায় আরও কয়েকজনের নামের সংযুক্তি ঘটেছে নব নির্মিত শহীদ বেদীতে। সভায় সিপিএম হার্মাদ প্রসঙ্গে কাজল সেখ বলেন, মানুষের উপরে নৃশংস অত্যাচার অত্যাচারের ঘটনা মনে করলে আজও শিউরে ওঠে মানুষ। কেষ্টদা দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোনে সমস্ত কিছু জানানোর পর দিদি এবং তদানীন্তন নেতা জয়ন্ত ভট্টাচার্য হাসপাতালে ছুটে আসেন। সেদিনের আন্দোলনে নানুর ব্লকের দায়িত্বে ছিলেন শেখ শাহনাওয়াজ, সোনা চৌধুরী, খালেক। সোনা চৌধুরী নেই। খালেক সাক্ষ্মী ছিল। আজকে সেই শহীদ দিবসে আমরা শহীদের আত্মার শান্তির জন্য জমায়েত হয়েছি। আজকের প্রজন্মের জ্ঞাতার্থে এই শহীদ স্মরণ প্রয়োজন। তাদের একটাই অপরাধ ছিল জগদ্দল পাথরের মতো বামফ্রন্ট সরকারের পরিবর্তন চেয়েছিলেন তাঁরা। সেই শহীদ দের কথা শুনলে যেমন কষ্ট হয়। তেমনি রক্ত টগবগ করে ফুটতে থাকে।
প্রসঙ্গত, ২০০০ সালের ২৭ জুলাইয়ে নানুরের সূচপুরের ১১টি পরিবারের সদস্যকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। সেই ঘটনার প্রধান সাক্ষী ছিলেন তৃণমূল সমর্থক আব্দুল খালেক। ২০০০সালে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিহত পরিবারের সদস্যদের চাকরী দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই কথা মত নিহত ১১টি পরিবারের মধ্যে ১০ টি পরিবারের সদস্য সরকারী চাকরী পেয়েছেন।