খসড়া তালিকায় প্রায় দেড় কোটি নামে অসঙ্গতি!
মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে খসড়া ভোটার তালিকা (SIR draft list West Bengal)। কমিশন (Election Commission) সূত্রের খবর, প্রকাশিত তালিকায় মোট সংখ্যা ১ কোটি ৬৩ লক্ষ ৫১ হাজার ১৭৩ জনের ক্ষেত্রে কোনও না কোনও তথ্যগত অসঙ্গতি রয়েছে। এদিন সেই তালিকাও জানাল কমিশন।
তবে ভোটার তালিকায় অসঙ্গতি থাকা মানেই সকলকে হিয়ারিংয়ে উপস্থিত হতে হবে, এমনটা নয়। কমিশন সূত্রের খবর, অসঙ্গতি থাকা মানেই সবাই নোটিস পাবেন, তা নয়। বরং যেগুলো টেকনিক্যাল এরর কিংবা বিএলওদের ভুল বা অ্যাপের ভুল সেটা আবার রিচেক করা হবে। ফলে সেক্ষেত্রে সকলকে নোটিস পাঠানো হবে না এবং মোট অসঙ্গতির সংখ্যাও কমতে পারে।
কমিশন সূত্রের খবর, মোট সংখ্যা ১ কোটি ৬৩ লক্ষ ৫১ হাজার ১৭৩ জনের প্রকাশ করা হলেও সংখ্যাটা কমে ১ লক্ষ ৩৬ হাজারের আশেপাশে থাকতে পারে। তবে রিচেকের পর এই সংখ্যাটাও কমতে পারে বলে মনে করছেন কমিশনের পদস্থ কর্তারা।
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে নাম নেই বা সেই ভোটার তালিকায় বাবা, মা, দাদু, দিদা বা পরিবারের কারও নাম নেই, এমন ২৩ লক্ষ ৬৪ হাজার ৩০ জনের অসঙ্গতি রয়েছে। যাদের বয়স ৪৫ বছরের বেশি এমন ১৯ লক্ষ ৩৯ হাজার ২৫০ জনের ক্ষেত্রেও অসঙ্গতি রয়েছে।
৪৫ বছর কেন? কারণ, যাঁদের বয়স এখন ৪৫ তাঁদের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকার কথা। ২৩ বছর আগে শেষ বার এসআইআর হয়েছে রাজ্যে। কারও বয়স এখন ৪৫ হলে ২০০২ সালে তাঁর বয়স ছিল ২২ বছর। ১৮ বছর বয়সে ভোটার তালিকায় নাম ওঠার কথা। কিন্তু ৪৫ বছর বয়স হলেও যাঁদের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ছিল না বা ২০০৬ সালে বিধানসভা ভোটের সময়ও যাঁদের নাম ভোটার লিস্টে ওঠেনি, তাঁদের নিয়ে কমিশনের সন্দেহ রয়েছে।
বাবার নামে অসঙ্গতি রয়েছে এমন ৮৫ লক্ষ ১ হাজার ৪৮৬ জনের ক্ষেত্রে অসঙ্গতি রয়েছে। আবার বাবার বয়স নিয়ে ধন্দ রয়েছে এমন ভোটারের সংখ্যাও ১৯ লক্ষর বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ১০ লক্ষ ৭৬ হাজার ৯৮১ জন ভোটারের ক্ষেত্রে বাবার সঙ্গে বয়সের ফারাক মাত্র ১৫ বছর। একইভাবে বাবার সঙ্গে বয়সের ফারাক ৫০ বছর এমন ভোটারের সংখ্যা ৮ লক্ষ ৫৯ হাজার ২৭৫।
এছাড়াও ৩ লক্ষ ১১ হাজার ৮১১ জনের ক্ষেত্রে ভোটার লিস্টে ঠাকুরদার সঙ্গে বয়সে গোলমাল রয়েছে। একইভাবে ১২ লক্ষ ৯৮ হাজার ৩৪০ জন ভোটারের ক্ষেত্রে লিঙ্গ সংক্রান্ত ভুল তথ্য রয়েছে।
তবে কমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, হিয়ারিংয়ে ডাকা মানেই নাম বাদ পড়বে এমন কোনও বিষয় নেই। যাদের ডাকা হচ্ছে তাদের অনেকের ক্ষেত্রেই টেকনিক্যাল সমস্যার জন্য ডাকা হচ্ছে। তবে যাদের নথি সংক্রান্ত সমস্যা থাকবে অর্থাৎ প্রয়োজনীয় নথি দাখিল করতে পারবেন না তাদের নাম বাদ যাবে।
এক্ষেত্রে কমিশনের পর্যবেক্ষক সুব্রত গুপ্ত আগেই স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, কেউ অসত্য নথি জমা দিলে তাঁর এবং যিনি সেই নথি অনুমোদন করছেন, সেই দু'তরফকেই পড়তে হবে শাস্তির মুখে।