দিল্লির বাতাসে বিষ!
দিল্লির আকাশ ধোঁয়ায় ঢেকে আছে (Delhi air pollution)। গত এক সপ্তাহ ধরে রাজধানীর বাতাস ‘খারাপ’ থেকে ‘খুব খারাপ’ পর্যায়ে রয়েছে। রবিবার (২ নভেম্বর) সকালে দিল্লির সামগ্রিক বায়ু মান সূচক (AQI) ছিল ৩৭৭, যা ‘খুব খারাপ’ শ্রেণিতে পড়ে। সকাল ১০টার পর আনন্দ বিহার, চাঁদনি চক, নেহরু নগর, আর কে পুরম, রোহিনির মতো এলাকার AQI ৪০০ ছাড়িয়ে যায়, অর্থাৎ সেসব জায়গার বাতাস ‘গুরুতর’ মানের হয়ে উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে রাজধানীর বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। দূষিত বাতাসের কারণে অনেকেই শ্বাসকষ্ট, কাশি, চোখে জ্বালা ও বুক জ্বালার মতো সমস্যায় ভুগছেন (Delhi pollution and health risks)। এই অবস্থায় প্রাক্তন এইমস চিকিৎসক ও খ্যাতনামা ফুসফুস বিশেষজ্ঞ ডা. গোপীচন্দ খিলনানি (Pulmonologist Dr Gopi Chand Khilnani) জানিয়েছেন, যাঁদের পক্ষে সম্ভব, তাঁরা কিছুদিনের জন্য দিল্লি ছেড়ে দূষণমুক্ত জায়গায় চলে যান।
সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “সকলের পক্ষে শহর ছাড়া সম্ভব নয়, কিন্তু যাঁদের ফুসফুস বা হৃদরোগ আছে, যাঁরা অক্সিজেনের উপর নির্ভর করেন, কিংবা যাঁদের পক্ষে অন্য জায়গায় গিয়ে থাকা সম্ভব, তাঁদের বলব, অন্তত ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ দিল্লির বাইরে থাকুন। এতে শ্বাসকষ্ট বা অন্য জটিলতা কিছুটা কমবে।"
চিকিৎসক খিলনানির মতে, বায়ু দূষণ (Delhi pollution) শুধু ফুসফুস নয়, আমাদের শরীরের প্রায় সব অঙ্গকেই প্রভাবিত করে। হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক, কিডনি, অন্ত্র, হরমোন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এইমসের একটি গবেষণায় জানা গেছে, দূষিত বাতাসে শিশুদের ফুসফুস ঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে না। আগে যেখানে ফুসফুসের রোগের (COPD) প্রধান কারণ ছিল ধূমপান, এখন তার অর্ধেকই হচ্ছে ঘরের ভেতর ও বাইরের দূষণের কারণে। এমনকি এখন যাঁরা ধূমপান করেন না তাঁদের অনেকেই ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছেন।
এখন প্রশ্ন উঠছে, এয়ার পিউরিফায়ার কি সত্যিই সাহায্য করতে পারে? এর উত্তরে ডা. খিলনানি বলেন, ভালো মানের এয়ার পিউরিফায়ার একটি ঘরের বাতাস কিছুক্ষণ পরিষ্কার রাখতে পারে, তবে সেটি সবসময় চালু রাখতে হবে এবং ঘরটির জানলা দরজা বন্ধ রাখতে হবে। ঘন ঘন দরজা-জানালা খোলা হলে এর কার্যকারিতা কমে যায়। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) পিউরিফায়ারকে খুব কার্যকর মনে করে না, তবে শ্বাসযন্ত্র বা হৃদরোগে আক্রান্তদের জন্য এটি কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে।