ভক্তদের চাপে হুড়মুড়িয়ে পড়ে গেলেন বিজয়, চেন্নাই বিমানবন্দরে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা, ভাইরাল ভিডিও |
জলাতঙ্ক হওয়া মোষের দুধের রায়তা ছিল মেনুতে, শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে খেয়ে ভ্যাকসিন নিল ২০০ গ্রামবাসী!
জলাতঙ্ক হওয়া মোষের দুধের রায়তা ছিল মেনুতে
প্রায় ২০০ জন গ্রামবাসী একসঙ্গে জলাতঙ্কের টিকা নিলেন। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের বাদাউন জেলার পিপরৌলি গ্রামের। হঠাৎ করে এত মানুষের একযোগে ব়্যাবিস ভ্যাকসিন নেওয়ার কারণ কী, তা জানতে গ্রাম জুড়ে ছড়িয়েছে কৌতূহল।
সূত্রের খবর, গত ২৩ ডিসেম্বর পিপরৌলি গ্রামে একটি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে অতিথিদের জন্য পরিবেশন করা হয় রায়তা। দই দিয়ে তৈরি একটি খাবার। পরে জানা যায়, ওই রায়তা তৈরিতে যে মোষের দুধ ব্যবহার করা হয়েছিল, সেই মোষটিকে কয়েক দিন আগে একটি কুকুর কামড়েছিল। ওই মোষটির মৃত্যু হয় ২৬ ডিসেম্বর। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংক্রমণের আশঙ্কায় অনেকেই দুশ্চিন্তায় ভুগতে শুরু করেন।
এরপর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে গ্রামবাসীরা উজহানি কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে একে একে জলাতঙ্কের টিকা নেন। এই প্রসঙ্গে জেলার চিফ মেডিক্যাল অফিসার রামেশ্বর মিশ্র জানান, তাঁদের কাছে খবর আসে যে একটি উন্মত্ত কুকুর একটি মোষকে কামড়েছিল এবং পরে জলাতঙ্কের লক্ষণ নিয়ে ওই মোষটির মৃত্যু হয়। সেই মোষের দুধ দিয়ে তৈরি রায়তা গ্রামের মানুষ খেয়েছিলেন। তাই সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে সতর্কতামূলকভাবে জলাতঙ্কের ইঞ্জেকশন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তাঁর কথায়, “প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই ভাল।”
চিকিৎসকরা জানান, সাধারণত দুধ ভালোভাবে ফুটানো হলে জলাতঙ্কের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে না। তবে কোনও সম্ভাব্য বিপদ এড়াতে গ্রামবাসীদের টিকা দেওয়া হয়েছে।
জলাতঙ্ক রোগের জন্য দায়ী Lyssavirus genus-এর ভাইরাস। মূলত কুকুর বা অন্যান্য পোষ্য প্রাণীর কামড় ও আঁচড়ের মাধ্যমে এই রোগ মানুষের শরীরে ছড়ায়। পোষ্যের লালা থেকেই সংক্রমণের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি, তবে আঁচড় থেকেও বিপদ হতে পারে। এমনকি এক রোগীর শরীর থেকে অন্য রোগীর শরীরেও সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এই ভাইরাস সরাসরি মানুষের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রে আঘাত হানে।
জলাতঙ্কে আক্রান্ত হলে জ্বর, উৎকণ্ঠা, বিভ্রান্তি, গলা ব্যথা, খাবার গিলতে অসুবিধা, হ্যালুসিনেশন এবং জলে ভয় পাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তাই কুকুর বা অন্য কোনও পোষ্য কামড়ালে কিংবা আঁচড়ালে বিষয়টিকে একেবারেই হালকা ভাবে নেওয়া উচিত নয়।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে জলাতঙ্কে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৭৫ শতাংশ কমেছে। তবে চিকিৎসা সাময়িকী Lancet-এর সমীক্ষা বলছে, এখনও প্রতি বছর দেশে অন্তত ৫ হাজার ৭২৬ জন জলাতঙ্কে প্রাণ হারান। বছরে প্রায় ৯০ লক্ষ মানুষ পশুর কামড়ের শিকার হন, যার মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রেই কুকুরের কামড়ের ঘটনা।