নিম্নচাপের জেরে রাজ্য জুড়ে হলুদ সতর্কবার্তা
ফের বৃষ্টির জেরে জনজীবন ব্যাহত। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে মধ্য কলকাতার একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত পার্ক স্ট্রিট, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, কলেজ স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া, বিবেকানন্দ রোড–সহ কাঁকুড়গাছির বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলের তলায় চলে যায়।
বৃষ্টির দাপটে রাতেও অনেককেই বাড়ি ফিরতে সমস্যায় পড়তে হয়। শহরের রাস্তাগুলিতে জল জমে যাওয়ায় ব্যাহত হয় যান চলাচল।
আবহাওয়া দফতরের সূত্রে খবর, চিন ও ভিয়েতনামে আছড়ে পড়া ঘূর্ণিঝড় ‘উইফা’-র একটি অংশ বঙ্গোপসাগরের উপর প্রভাব ফেলেছে। তার জেরে বৃহস্পতিবার একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়, যা ক্রমশ ঘনীভূত হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
এর প্রভাবেই দক্ষিণবঙ্গজুড়ে ব্যাপক বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। রাজ্যে জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আগামী সোমবার (২৯ জুলাই) পর্যন্ত চলতে পারে। এই নিম্নচাপ যদি ঘনীভূত হয়, তাহলে শুক্রবার পর্যন্ত চলতে পারে টানা বৃষ্টি।
আজ, শুক্রবার দিনভর পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব- পশ্চিম বর্ধমান, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম এলাকায় অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। উপকূলবর্তী এলাকাতেও জারি হয়েছে সতর্কতা।
সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও দুই মেদিনীপুরে ফের ভারী বৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাতেও দমকা হাওয়ার সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে জলস্তর বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রাজ্যের একাধিক নিচু এলাকাও নতুন করে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সমুদ্র উত্তাল থাকার কারণে বৃহস্পতিবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
শুধু দক্ষিণবঙ্গ নয়, উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলাতেও শুক্রবার দমকা ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন।
এদিকে গতকাল একদিনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বাজ পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৭ জন। তাই আবহাওয়ার সতর্কতা মেনে চলা এবং অপ্রয়োজনে ঘর থেকে না বেরনোর পরামর্শ দিচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তারাও।