রাহুলকে চাঁচাছোলা আক্রমণ শাহের
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার অপারেশন সিঁদুর নিয়ে লোকসভায় বিশেষ আলোচনায় কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে তুলোধনা করেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাহুলকে চ্যালেঞ্জ ঠুকে বলেন, ২০০৫ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত কটা হামলা হয়েছে! এই কয়েক বছরে মোট ২৭টি বড় হামলায় হাজারের উপর বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন। এর জবাবে কংগ্রেস সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে, লোকসভায় তার উত্তর চান অমিত শাহ।
অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সরকারের জবাব চেয়ে কংগ্রেস গোড়া থেকে সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি দাবি করছিল। তাই প্রধান বিরোধী দলের নেতা রাহুল ও কংগ্রেসকে তেড়েফুঁড়ে আক্রমণ করেন শাহ। তিনি বলেন, এরা সেই কংগ্রেস যারা সিন্ধু জলচুক্তিতে ৮০ শতাংশ জল ছেড়ে দিয়েছিল পাকিস্তানকে। এরা সেই কংগ্রেস, যাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ার সুযোগ ছেড়ে দিয়েছিলেন। নেহরুর একটি চিঠি উদ্ধৃত করে শাহ বলেন, তৎকালীন মার্কিন প্রস্তাব ছিল যে, চিনকে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যের মর্যাদা না দিয়ে ভারতকে রাখার। খোদ নেহরু সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছিলেন।
কংগ্রেসকে আরও বিঁধে শাহ বলেন, আমরা মনমোহন সিংয়ের সরকার নই। আমরা চুপ করে বসে থাকার পাত্র নই। পাকিস্তানকে একের পর এক অনুরোধপত্র পাঠাই না। গত ৯ মে তারিখে পাকিস্তানের ১১টি বিমানঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। তার মধ্যে ৮টি এমনই নিখুঁত ছিল যে, যাতে পাকিস্তানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেঁপে উঠেছিল। এনডিএ সরকারের আমলে জঙ্গি নিকেশের হার ১২৩ শতাংশ বেড়েছে। আর কাশ্মীরকে জঙ্গিশূন্য করার পণ নিয়েছি আমরা।
ভারতের আক্রমণে পাকিস্তানের একের পর এক যুদ্ধকৌশলগত কাঠামো যখন গুঁড়িয়ে যাচ্ছিল, তখন ইসলামাবাদের আত্মসমর্পণ ছাড়া বিকল্প রাস্তা খোলা ছিল না। তিনি সভায় জানান, ক্ষতবিক্ষত পাকিস্তানের ডিজিএমও ভারতের ডিজিএমওকে ফোন করে সংঘর্ষ বিরতির অনুরোধ করেন। শাহ কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বলেন, অতীতে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ঘোরতর আপত্তি সত্ত্বেও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু একতরফা সংঘর্ষ বিরতি ঘোষণা করে দেন। শাহ দাবি করে বলেন, আর সেদিন তা না করলে বর্তমানে কাশ্মীর বলে কোনও সমস্যাই থাকত না।
অপারেশন মহাদেবে মৃত তিনজনেই যে পাকিস্তানি জঙ্গি তার প্রমাণ দিয়ে বলেন, সুলেমান, আফগান ও জিবরানকে যারা খাদ্য-রসদ দিয়ে সাহায্য করেছিল, তাদের আগেই হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। তিন মৃতদেহ শ্রীনগরে নিয়ে আসার পর তারাই দেহগুলি শনাক্ত করে। শাহ আরও বলেন, পহলগাম হানার পরপরই আমি কাশ্মীরে গিয়ে পৌঁছাই। সেখানে পরিষ্কার জানিয়ে দিই, যে জঙ্গিরা এই নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা যেন পার না পায়। কোনওভাবেই সীমান্ত ডিঙিয়ে ওপারে যেতে না পারে।
বিরোধীদের নাম না করে বলেন, জঙ্গিরা খতম হয়েছে শুনে বিরোধীদের অনেকেই হয়তো খুশি হননি। তবে ওদের ধর্ম দেখে আপনাদের দুঃখিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। সেই সময় বিরোধী বেঞ্চ থেকে প্রবল আপত্তি ওঠে। তিনি প্রমাণ দিয়ে বলেন, জঙ্গিদের সাহায্যকারী ছাড়াও যাঁরা মারা গিয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও শনাক্ত করেছেন। শুধু তাই নয়, এনকাউন্টারে তারা যে গুলি চালিয়েছিল তার ফরেনসিক রিপোর্টও বলছে, এরাই বৈসরনে গুলি চালিয়েছিল।