বিচারের দাবিতে সিজিও কমপ্লেক্সে ঝাঁটা হাতে মহিলারা
আরজিকর হাসপাতালের (RG Kar Case) ডাক্তারি ছাত্রীকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় এক বছর। অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত শুধু এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার গ্রেফতার হলেও বাকিরা অধরা। বিচার নিয়ে ধোঁয়াশা ও তদন্তে দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগে ফের পথে নামল ‘অভয়া মঞ্চ’।
শুক্রবার বিকেলে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে সিজিও কমপ্লেক্সের উদ্দেশে শুরু হয় বিক্ষোভ মিছিল। অভিযানে অংশ নেন মহিলা সদস্যরাও। তাঁদের হাতে ছিল ঝাঁটা ও প্রতীকী তালা-চাবি। সিজিও কমপ্লেক্সের গেটের সামনে এসে প্রতীকী তালা ঝুলিয়ে এবং ঝাঁটা ছুড়ে প্রতিবাদ জানান তাঁরা।
মিছিলে বারবারই উঠছিল স্লোগান— 'জাস্টিস ফর তিলোত্তমা' (Justice for Tilottama)। অভয়া মঞ্চের অভিযোগ, সিবিআই (CBI) তদন্তে স্বচ্ছতা নেই। তদন্ত হাতে নেওয়ার পরেই সংস্থা জানিয়েছিল, ঘটনাস্থলের প্রমাণ লোপাট করা হয়েছে, এবং আরজিকরের একাধিক চিকিৎসকের নামও উঠে এসেছিল। তবে, এত দিনেও তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। কোনও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট চার্জশিট তো দূরের কথা, অধিকাংশ তথ্যই এখনও অস্পষ্ট।
কেন সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান?
সিবিআইয়ের অফিস এই ভবনেই। অভয়া মঞ্চের প্রতিনিধিরা বলেন, “তদন্তের অগ্রগতি নেই। যাঁদের নাম তদন্তে এসেছিল, তাঁদের নিয়ে চুপ সিবিআই। আমরা জানতে চাই, কেন এখনও বিচার হয়নি।”
তাঁদের দাবি, তদন্তে গড়িমসি বরদাস্ত করা হবে না। এই ধরনের মৃত্যু যেন ভবিষ্যতে না ঘটে, তার জন্য দৃষ্টান্তমূলক বিচার চায় সমাজ।
সিজিও কমপ্লেক্সের গেটে প্রতীকী তালা ঝোলানো হয়। ঝাঁটা ছুড়ে বার্তা দেওয়া হয়, “যাঁরা তদন্ত করছেন, তাঁরা নিজেদের দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলছেন, তাই এই ঝাঁটা।” মিছিলে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী, ছাত্র-ছাত্রী, সমাজকর্মী-সহ বহু বিশিষ্টজন। অভয়া মঞ্চ সূত্রে খবর, “এটাই শেষ নয়, প্রয়োজনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে।”
গত বছরের ৮ অগস্ট গভীর রাতে আরজি করের সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয়েছিল ডাক্তারি ছাত্রীর রক্তাক্ত দেহ। ওই ঘটনার প্রায় এক বছরের মুখে প্রতিবাদীদের মুখে ঘুরপাক খাচ্ছে একাধিক প্রশ্ন, সিবিআই কেন এখনও তথ্য প্রমাণ পেশ করতে পারল না? কেন চিকিৎসকদের নাম প্রকাশ্যে এলেও তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হয়নি? এক আন্দোলনকারী বলেন, “এক তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে গেলে সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থার প্রতি আস্থা হারাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।” তবে এ ব্যাপারে তদন্তকারী সংস্থার কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।