রাফালে রাষ্ট্রপতির জার্নির সঙ্গী শিবাঙ্গী
বুধবার যুদ্ধবিমান রাফাল চেপে আকাশে উড়লেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এই ঐতিহাসিক উড়ানে তাঁর পাশে ছিলেন উইং কম্যান্ডার শিবাঙ্গী সিং, যিনি দেশের একমাত্র মহিলা রাফাল পাইলট।
এই মুহূর্ত ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতায় নতুন আত্মবিশ্বাস রচনা করল বলে মনে করছেন অনেকে। রাষ্ট্রপতি মুর্মু-ই দেশের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান, যিনি দু’টি যুদ্ধবিমানে উড়লেন, ২০২৩ সালে সুখোই-৩০ এমকেআই, আর এবার রাফাল।
৩০ মিনিটের এই ফ্লাইটে পাইলট ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন অমিত গেহানি, আম্বালা ঘাঁটির ১৭ নম্বর স্কোয়াড্রনের কম্যান্ডিং অফিসার। আকাশে প্রায় ১৫,০০০ ফুট উচ্চতা, ঘণ্টায় ৭০০ কিমি গতিতে প্রায় ২০০ কিমি পথ উড়েছেন রাষ্ট্রপতি।
ফ্লাইট শেষে স্টেশনের ভিজিটর বইতে নিজের অনুভূতি লেখেন, “রাফালে এই উড়ান আমার কাছে এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা। দেশের প্রতিরক্ষা শক্তির প্রতি এই অভিজ্ঞতা আমাকে নতুন করে গর্বিত করেছে।” এর পর ছবি তোলেন শিবাঙ্গী সিংয়ের সঙ্গে।
কে এই সাহসী মহিলা?
উত্তরপ্রদেশের বারাণসীর মেয়ে উইং কম্যান্ডার শিবাঙ্গী সিং ছোটবেলায় দিল্লির এয়ার ফোর্স মিউজিয়ামে ঘুরতে গিয়ে উড়ান জীবনের প্রতি আকর্ষিত হন। পরে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (BHU) থেকে স্নাতক পাশ করে যোগ দেন হায়দরাবাদের এয়ার ফোর্স অ্যাকাডেমিতে। সেখানেই কঠোর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তৈরি হন ফাইটার পাইলট।
২০১৭ সালে ভারতীয় বায়ুসেনার দ্বিতীয় ব্যাচের মহিলা ফাইটার পাইলটদের মধ্যে তিনি নির্বাচিত হন। ক্যারিয়ারের প্রথম পর্যায়ে তিনি চালিয়েছেন MiG-21 Bison, যা IAF-এর অন্যতম কঠিন ও দ্রুতগতির যুদ্ধবিমান।
২০২০ সালে তাঁকে বাছা হয় রাফাল কনভার্সন ট্রেনিং-এর জন্য। এই প্রশিক্ষণে ফরাসি বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে উন্নত সিমুলেটর ও ট্যাকটিক্যাল ইন্সট্রাকশন সেশনের মাধ্যমে তিনি রাফালের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও অস্ত্র ব্যবস্থার প্রশিক্ষণ নেন।
রাফালের মূল শক্তি এর Thales RBE2 AESA রাডার ও প্রিসিশন-স্ট্রাইক ক্ষমতা, যা এই বিমানকে ৪.৫ জেনারেশনের অন্যতম শক্তিশালী ফাইটার জেটে পরিণত করেছে। ২০২৩ সালে ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত এক্সারসাইজ ওরিয়নে বিশ্বের শীর্ষ বায়ুসেনা পাইলট ও আধিকারিকদের সঙ্গে ভারতীয় বায়ুসেনার প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন শিবাঙ্গী।