বাবার দশমবারের শপথগ্রহণে বিশেষ উপস্থিতি
২০০০ সালে মাত্র সাত-আট দিনের অতি স্বল্প মেয়াদের মুখ্যমন্ত্রিত্ব! তারপর কেটে গিয়েছে দীর্ঘ পঁচিশ বছর। বৃহস্পতিবার দশমবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী (10th Time CM) হিসেবে শপথ নিলেন নীতীশ কুমার (Nitish Kumar)। রাজনীতির ময়দানে তিনি যে নিজের ক্ষমতায় আলাদা এক জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন, তা বিহারের জন্য বিশেষ এক নজিরও বটে।
পাটনার গান্ধী ময়দানে আয়োজিত সেই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ এনডিএ-র শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু ভিড়ের মধ্যেও নজর কাড়লেন আর এক বিশেষ অতিথি - নীতীশ কুমারের একমাত্র ছেলে নিশান্ত (Nishant Kumar)।
বিহারের রাজনৈতিক পরিবারগুলিতে যেখানে সন্তানদের উত্তরসূরি হিসেবে গড়ে তোলা প্রায় নিয়ম, সেখানেই ব্যতিক্রম নিশান্ত কুমার (Nitish Kumar son Nishant Kumar)। আলোচনার আড়ালেই থাকতে পছন্দ করেন তিনি। সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁকে দেখা যায় না বললেই চলে। তাই এদিন সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া তাঁর সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারকে (Nishant Kumar interview) স্বাভাবিক ভাবেই ‘বিরল’ বলছে রাজনীতির মানুষরা।
শপথগ্রহণের ঠিক পরেই নিশান্ত বলেন, ''দশমবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার জন্য বাবাকে অভিনন্দন। আমাদের জয়ে জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই।''
এবারের বিধানসভা নির্বাচনে নীতীশ-কমান্ডে জেডিইউ-বিজেপি জোট মোট ২০২টি আসন পেয়েছে। বিজেপি পেয়েছে ৮৯টি, আর জেডিইউ ৮৫টি আসন - যা ২০২০ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
বাবার এই বিপুল জয়ের বিষয়ে নিশান্ত বলেন,
“আশা ছিল বাবা জিতবেন। কিন্তু মানুষ আমাদের যেভাবে সমর্থন করলেন, তা প্রত্যাশার থেকেও বেশি। গতবার আমরা ৪৩টি আসন পেয়েছিলাম। বাবা নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ চালিয়ে গেছেন, আর মানুষ সেটা মনে রেখেছেন। তাঁদের ধন্যবাদ।”
জয়ের নেপথ্যে মহিলাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকেও উল্লেখ করেন নিশান্ত। জানান, দুই দশক ধরে ক্ষমতায় থেকে নারীর ক্ষমতায়নকে নীতীশ কুমার অগ্রাধিকার দিয়েছেন। পাশাপাশি এনডিএ-র সহযোগী দল - বিজেপি, এলজেপি (রামবিলাস), হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা ও রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চার নেতা-কর্মীদেরও ধন্যবাদ জানান তিনি।
এরপর যখন সাংবাদিক তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, তাহলে এবার কি তাঁর রাজনীতিতে প্রবেশের কোনও ভাবনা আছে, নিশান্ত কেবল হেসে প্রতিক্রিয়া দেন। যার অর্থ কী, একমাত্র সময়ই বলবে।
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার নিশান্ত মেসরা–র (BIT Birla Institute of Technology) থেকে পড়াশোনা করেছেন। প্রায় আট বছর আগে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “রাজনীতিতে আমার কোনও আগ্রহ নেই। এই ক্ষেত্র সম্পর্কে খুব বেশি জানিও না। আমার প্রথম ভালবাসা আধ্যাত্মিকতা, আর সেই পথেই এগোচ্ছি।”
তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাবার সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যাচ্ছে। দলের অভ্যন্তরীণ আলোচনাতেও তাঁর উপস্থিতি নিয়ে জল্পনা বেড়েছে। রাজনৈতিক মহল তাই প্রশ্ন তুলছে, নীরব থাকা সেই নিশান্ত কি এবার আস্তে আস্তে রাজনৈতিক ময়দানে পা রাখতে চলেছেন?