সাইকেল চালিয়ে ব্যবসা শুরু, আজ ৫০০ কোটির সম্পদ! ব্র্যান্ডটি আপনার ঘরেও রয়েছে, কে এই বাঙালি?
সাইকেল চালিয়ে ব্যবসা শুরু, আজ ৫০০ কোটির সম্পদ
মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের উদাত্ত কণ্ঠে স্তোত্র পাঠ ও মহিষাসুরমর্দিনী। বাঙালির দুর্গাপুজোর শুরু হয় যেন ওই দিনই। তবে, তারও আগে পুজো আসছে পুজো আসছে ভাবটা কিছু দিন আগেও নিয়ে আসত একটি বিজ্ঞাপন। আজ হয়তো টিভিতে আর খুব একটা দেখা যায় না বিখ্যাত সেই বিজ্ঞাপন। শোনা যায় না, সেই ‘চিরনবীন’ জিঙ্গল। কিন্তু বাঙালির মনে চিরকালীন জায়গা করে নিয়েছে শালিমার নারকেল তেলের সেই গান।
সামান্য নারকেল তেলের ব্যবসা থেকে ৫০০ কোটি টাকার বিশাল সাম্রাজ্য। ১৯৪১ সালে প্রকৃতিনাথ ভট্টাচার্যের হাত ধরে পথচলা শুরু করেছিল এই সংস্থা। ৮৪ বছর পার করে শালিমার কেমিক্যাল ওয়ার্কস যেন হয়ে উঠেছে বাঙালির ঐতিহ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
কীভাবে শুরু?
১৯৩০ সাল থেকেই সাইকেলে চেপে প্যাকেটজাত নারকেল তেল বিক্রি করতেন প্রকৃতিনাথ ভট্টাচার্য। আর তাঁর হাত ধরেই ১৯৪১ সালে উত্তর কলকাতার কারখানা থেকে শুরু হয় নারকেল তেল প্রস্তুতকারক শালিমারের যাত্রা। পরের বছর অর্থাৎ, ১৯৪২ সালে, তাঁর সঙ্গে যোগ দেন পঞ্চানন মণ্ডল। ১৯৪৫ সালে এই সংস্থা সরকারি খাতায় নথিভুক্ত হয়। তারপর ধীরে ধীরে কলকাতা ছেড়ে শহরতলিতেও কারখানা খোলে এই সংস্থা। ১৯৮৬ সালে নতুন কারখানা চালু হয় হায়দরাবাদে। বর্তমানে সারা ভারতে সংস্থার মোট ২০টি কারখানা রয়েছে।
নারকেল তেল থেকে উত্তরণ
শুধুমাত্র নারকেল তেল বিক্রি করেই থেমে থাকেনি শালিমার। সময়ের চাহিদা অনুযায়ী সরষের তেল, সূর্যমুখী তেল ও মশলার বাজারেও পা রেখেছে এই সংস্থা। ‘শালিমার’ আর ‘শেফস’ ব্র্যান্ডের অধীনে এই সব পণ্য বিক্রি করে তারা। এ ছাড়াও আয়ুর্বেদিক ও মেডিকেটেড হেয়ার অয়েলও রয়েছে এই সংস্থার পোর্টফোলিওতে।
পূর্ব ভারতে নারকেল তেলের বাজারে শালিমার অন্যতম সেরা নাম। দেশ ছাড়িয়ে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী দেশ এবং কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো দেশেও পাওয়া যায় তাদের পণ্য।
এই সংস্থার মালিকানা আজও রয়েছে প্রকৃতিনাথ ভট্টাচার্যের পরিবারের হাতেই। বর্তমান ম্যানেজিং ডিরেক্টর সোমনাথ ভট্টাচার্যের মতে, বিশুদ্ধতা ও গ্রাহকের বিশ্বাসই এই সংস্থার সাফল্যের মূল ভিত্তি। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে তাদের ব্যবসা পেরিয়েছে ৫০০ কোটি টাকার। আর এটা যেন সেই বিশ্বাসেরই প্রতিফলন।