কোমর জলে নেমে শহরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন মেয়র, ছাতা দিয়ে সাফ করলেন রাস্তার জঞ্জালও |
প্রিয় জুবিনদাকে চোখের জলে বিদায়, শেষকৃত্যে মহাযাত্রার ছবি
প্রিয় জুবিনদাকে চোখের জলে বিদায়
অসম হারাল তার প্রিয়তম শিল্পীকে। ৫২ বছর বয়সে সিঙ্গাপুরে এক দুর্ঘটনায় প্রয়াত হয়েছেন জুবিন গর্গ (Zubeen Garg)। মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে তাঁর শেষযাত্রা। অর্জুন ভোগেশ্বর বড়ুয়া স্পোর্টস কমপ্লেক্স থেকে শুরু করে কামরূপ জেলার কামারকুচি গ্রামের শ্মশান পর্যন্ত মানুষের ঢল নেমেছে। ‘জুবিনদা’র শেষকৃত্যে যেন এক মহাযাত্রার ছবি ফুটে উঠেছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমিয়েছেন জুবিনের শেষকৃত্যের সাক্ষী হতে। ভক্তরা একদিকে গাইতে শুরু করেছেন তাঁর জনপ্রিয় গান মায়াবিনী রাতির বুকুত, অন্যদিকে ধ্বনিত হচ্ছে স্লোগান—“জয় জুবিনদা”, “জুবিনদা জিন্দাবাদ”। গান বন্ধ হলেও অনেক ভক্ত নিজেরাই গাইতে থাকেন।
অসীম বেদনার মুহূর্তে জুবিন গর্গের স্ত্রী গরিমা সইকিয়া গর্গ স্বামীর কফিনের পাশে দাঁড়িয়ে শেষ বিদায় জানান। তাঁদের বিয়ে হয়েছিল ২০০২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি। স্ত্রীকে দেখে উপস্থিত মানুষ আবেগ সামলাতে পারেননি। শ্মশান প্রাঙ্গণে নীরবতার সঙ্গে মিশে গিয়েছে কান্নার রোল।
শ্মশান প্রাঙ্গণে ২১ বার বন্দুকের গর্জনে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয় শিল্পীকে। তারপর মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যেই সম্পন্ন হয় শেষকৃত্য। এদিন শেষযাত্রার শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন গায়ক পাপন, পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরণ রিজিজু।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানান, রাজ্য সরকার জুবিনের স্মৃতিতে দুটি স্মারক নির্মাণ করবে। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “আজ থেকে জুবিন অসমের প্রাণে, মনে ও হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন। এই এক ছবিতেই তাঁর জীবন ও দর্শন ধরা পড়েছে—সব সম্প্রদায়ের ভালোবাসা তিনি অর্জন করেছিলেন।”
বিখ্যাত শিল্পী উদিত নারায়ণ বলেন, “জুবিন ছিলেন সত্যিকারের প্রতিভা। চল্লিশটি ভাষায় গান গাওয়া সহজ নয়। তিনি মানুষের হৃদয়ে রাজত্ব করেছেন। এত অল্প বয়সে চলে যাওয়া উচিত হয়নি।” উষা উত্থুপও স্মরণ করেন জুবিনকে—“আমি তাঁর পোশাকের রুচি খুব পছন্দ করতাম। তিনি আলাদা ছিলেন, ভিন্ন ছিলেন।” অভিনেত্রী প্লাবিতা বড়ঠাকুর বলেন, “জুবিন দুই পায়ে আলাদা রঙের জুতো পরতেন। রসিকতা ও সরলতা তাঁকে আলাদা করে তুলেছিল।”