ছাত্র নির্বাচন নিয়ে রাজ্যকে নিদান আদালতের, দ্রুত রিপোর্ট পেশের নির্দেশ |
২১ জুলাইয়ের সভা নিয়ে বিরক্ত হাইকোর্ট! 'জনগণ কত সহ্য করবে?
২১ জুলাইয়ের সভা নিয়ে বিরক্ত হাইকোর্ট!
একুশে জুলাই তৃণমূলের শহিদ সমাবেশের জেরে শহরের জনজীবন ব্যাহত হতে পারে, এমন আশঙ্কা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বামপন্থী আইনজীবীদের সংগঠন। ওই মামলায় বৃহস্পতিবার কড়া পর্যবেক্ষণ সামনে আনলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। সভার অনুমতি নিয়ে আপত্তি না থাকলেও, শহরবাসীর দুর্ভোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। প্রশ্ন তুললেন, “জনগণ কতক্ষণ সহ্য করবে?”
বিচারপতির এই মন্তব্যে যেন রাজ্যের উপর চাপ বেড়েছে আরও খানিকটা। শুনানিতে রাজ্যের পক্ষে অ্যাডভোকেট জেনারেল (AG) যুক্তি দেন, “সমস্ত নিয়ম মেনেই সভার অনুমতি নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির সফরেও এমন ট্র্যাফিক বিধিনিষেধ থাকে। এই সভা তো গত তিন দশক ধরেই হচ্ছে।”
কিন্তু তাতেও সন্তুষ্ট নয় আদালত। বিচারপতি পাল্টা বলেন, “তাহলে কি কলকাতার পুলিশ কমিশনার মুচলেকা দেবেন যে, কোনও যানজট হবে না? জনগণ কতটা সহ্য করবে, সেটাও ভাবতে হবে।”
এখানেই থেমে না থেকে বিচারপতি আরও বলেন, “আমি এই বছর সভায় হস্তক্ষেপ করব না। তবে কিছু বিধিনিষেধ তো দিতেই হবে।” এরপরই বিচারপতির নির্দেশ,
-
সকাল ১১টার আগে শহরে সভার জন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না
-
যাঁরা রবিবারের মধ্যেই কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছেন, তাঁরাই সভায় যোগ দিতে পারবেন
-
রাস্তার এক-তৃতীয়াংশ সর্বদা খালি রাখতে হবে
মামলাকারী আইনজীবী শামীম বলেন, “আমি কোনও রাজনৈতিক সভার বিরোধিতা করছি না। কিন্তু প্রশ্ন, কেন এক দলকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে, অন্যদের নয়? ১৬ জুলাইয়ের বিজ্ঞপ্তিতে তো বলা হয়েছে, মধ্য কলকাতার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ২০ ঘণ্টা ধরে যান চলাচল বন্ধ থাকবে!”
রাজ্যের আইনজীবীর পাল্টা বক্তব্য, “ব্রিগেড সভা হোক বা দুর্গাপুজো— সব ক্ষেত্রেই ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ থাকে। সব রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রেই নিয়ম এক।”
এ ব্যাপারে আদালতের পর্যবেক্ষণ, এমন বড় সভার জন্য ভবিষ্যতে স্টেডিয়ামের মতো পরিকাঠামো ভাড়া নেওয়ার ভাবনাচিন্তা করা উচিত। বিচারপতির কড়া বার্তা— “১ লক্ষ মানুষের ধারণক্ষমতা রয়েছে এমন কোনও স্টেডিয়াম কেন ব্যবহার করা হবে না? রাস্তা তো সকলের।”
রাজ্য সরকারকেও স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি, ভবিষ্যতের জন্য এমন কর্মসূচির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ না হয়।