বনে মিলল মানুষ-হাতির মমতার সুর
ঘন জঙ্গলের বুক চিরে এক বিকেলের নীরবতা। দূর থেকে ভেসে আসছে ভারী পায়ের শব্দ, মাটির বুকে হালকা কাঁপুনি। মুহূর্তেই স্পষ্ট হয়, জঙ্গলের পথ ধরে এগিয়ে আসছে এক বিশাল হাতির দল। সামনে ছোট ছোট গ্রাম, পথের দু’ধারে আতঙ্কিত মানুষ। কিন্তু এই দিনটা অন্য দিনের মতো ছিল না — আজ ভয় নয়, মানুষের কথায় থামিয়ে দিল বন্যের তাণ্ডব!
“যাও বাবু, জঙ্গল মে যাও, রোড পে খাড়া নহি হোতে!” (Jao Babu Jungle Mai Jao) এই একটিমাত্র বাক্য, মৃদু অথচ দৃঢ় সুরে উচ্চারিত হল বনরক্ষী ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের কণ্ঠে। আর আশ্চর্যজনকভাবে, যেন সেই শব্দের মায়ায় থেমে গেল হাতিরা (Elephant)। এক পা এক পা করে তারা ফিরতে শুরু করল বনপথে, যেন মানুষ আর প্রাণীর মধ্যে এক অদ্ভুত বোঝাপড়া তৈরি হয়ে গেছে (Human-Elephant Compassion)!
ছত্তীসগড়ের মহাসমুন্দ জেলার বরণাপাল অঞ্চলের (Chhattisgarh Forest) এই ঘটনা এখন দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। হাতি-মানুষ সংঘর্ষে যেখানে প্রায়ই প্রাণহানি ঘটে, সেখানে শুধু কথার জাদুতে শান্ত হল বন্য দল!
স্থানীয় এক বনকর্মী জানান, “আমরা জানি হাতিদেরও আবেগ আছে। রেগে গেলে নয়, শান্তভাবে কথা বললেই তারা সাড়া দেয়। আমরা শুধু বলেছিলাম, এই রাস্তা তোমাদের নয়, জঙ্গলে ফিরো।”
ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রায় ২০ সদস্যের হাতির দল রাস্তার ধারে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর ধীরে ধীরে বনমুখে ঘুরে যায়। উপস্থিত গ্রামবাসীরা হাততালি দিয়ে তাদের বিদায় জানায়, যেন কোনও যোদ্ধা বিজয় শেষে ঘরে ফিরছে।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এটাই প্রকৃত 'সহাবস্থান' এর উদাহরণ। আধুনিক প্রযুক্তি, ড্রোন আর লাউডস্পিকারের বদলে এখানে কাজ করেছে মানবিকতা আর মমতা।
একজন প্রবীণ গ্রামবাসী বলেন, “আমরা ছোটবেলা থেকে শুনেছি — বনের অতিথিকে রাগিও না, তাকে বোঝাও। হাতি রাগ করে না, ভয় পেলে তাণ্ডব চালায়।”
‘যাও বাবু’— এখন এক প্রতীক সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন ট্রেন্ড করছে এই বাক্য: #JaoBabuJungleMaiJao,মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে সেই দৃশ্য, যেখানে ভয় জয় করে ভালবাসা জিতেছে।