কাশির ওষুধ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল রাজ্যে
দেশের একাধিক রাজ্যে কাশির ওষুধ (Cough Syrup) খেয়ে শিশু মৃত্যুর (Child Death) ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্র। মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ুতে 'বিষাক্ত' ওই কাফ সিরাপ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এবার একই সিদ্ধান্ত পশ্চিমবঙ্গেও (West Bengal) নেওয়া হল।
এই রাজ্যে নিষিদ্ধ করা হল ‘কোল্ডরিফ’ কাফ সিরাপের (Coldrif Cough Syrup Banned) বিক্রি। সম্প্রতি এক নির্দেশিকায় সমস্ত খুচরো ও পাইকারি ওষুধ বিক্রেতাকে অবিলম্বে এই সিরাপ বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে ‘বেঙ্গল কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস অ্যাসোসিয়েশন’ (BCDA)।
সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, মধ্যপ্রদেশে (Madhya Pradesh) শিশুদের মৃত্যুর ঘটনায় এই কাফ সিরাপের ভূমিকা সন্দেহ করা হচ্ছে। যদিও ওই রাজ্যে বিতরণ হওয়া ব্যাচটি এখনও পশ্চিমবঙ্গে আসেনি, তবুও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বিক্রি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিসিডিএ-র তরফে জানান হয়েছে, মধ্যপ্রদেশে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সিরাপের ব্যাচ রাজ্যে প্রবেশ করেনি। কিন্তু নিরাপত্তার স্বার্থে সমস্ত বিক্রেতাকে বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১১ অক্টোবর ওষুধ বিক্রেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠকও ডাকা হয়েছে বলে জানা গেছে।
শিশু মৃত্যুর ঘটনায় 'দায়ী কাফ সিরাপ প্রস্তুতকারক সংস্থা তামিলনাড়ুর একটি ওষুধ কোম্পানি। তার মালিক ইতিমধ্যে গ্রেফতার (Arrest) হয়েছে। সিরাপটিতে প্রপিলিন গ্লাইকল, গ্লিসারিন ও সরবিটলের মতো রাসায়নিক উপাদান পাওয়া গেছে বলে সূত্রের খবর।
রাজ্য ওষুধ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে, এই উপাদানগুলি শুধুমাত্র অনুমোদিত সরবরাহকারীর কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হবে এবং সেগুলি সরকারি স্বীকৃত পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করাতে হবে। পরীক্ষার রিপোর্ট বোর্ডের লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, বিপদের মূল উৎস অন্য জায়গাতেও থাকতে পারে। কারণ এই ধরনের সিরাপে ডাইইথিলিন গ্লাইকল ও ইথিলিন গ্লাইকলের উপস্থিতি ধরা পড়েছে - যা কিডনি বিকল হওয়ার অন্যতম কারণ।
প্রসঙ্গত, বিতর্কিত কাশির সিরাপ কোল্ডরিফ প্রস্তুতকারক শ্রীসন ফার্মাসিউটিক্যালসের মালিক জি রঙ্গনাথনকে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ বৃহস্পতিবার চেন্নাই থেকে গ্রেফতার করেছে। ১৯৮০ সালের গোড়ার দিকে রঙ্গনাথন এই বহু খনিজ ও ভিটামিনে সমৃদ্ধ সিরাপকে প্রসূতিদের জন্য আলাদাভাবে বিক্রি শুরু করেন। খুব অল্পদিনের মধ্যেই এই সিরাপটিও বিখ্যাত হয়ে ওঠে। কিন্তু রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোল দফতর আপত্তি জানায় এতে ব্যবহৃত কিছু উপাদানের লাইসেন্স না থাকায়। এর কিছু দিনের মধ্যেই রঙ্গনাথন সেই লাইসেন্স পেয়ে যান এবং তাঁর ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠতে থাকে।