কোমর জলে নেমে শহরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন মেয়র, ছাতা দিয়ে সাফ করলেন রাস্তার জঞ্জালও |
৭৮ সালের বন্যার ৪৭ বছর পূর্ণ হবে বৃহস্পতিবার, পুজোর মুখে কেমন বৃষ্টি হয়েছিল সেবার?
৭৮ সালের বন্যার ৪৭ বছর পূর্ণ হবে বৃহস্পতিবার
সোমবার রাতে কলকাতায় মাত্র ৫ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৩০০ মিলিমিটার। এ কথা বললে, অনেকেই এই ভয়বহতা আন্দাজ করতে পারবেন না। পুরসভার যে নিকাশী পাইপ রয়েছে তা নিয়ে ঘণ্টায় মাত্র ২০ মিলিমিটার বৃষ্টির জল খালে ফেলতে পারে। এতেই বোঝা যাচ্ছে, কলকাতা ডুবে যাওয়ার কারণটা। যা দেখে অনেকেই ৭৮ সালের বন্যার (1978 Kolkata Flood) স্মৃতি হাতড়াতে শুরু করেছেন।
এখন যাঁদের বয়স ৫০। তাঁদেরও সেই বৃষ্টির স্মৃতি ফিকে। কিন্তু প্রবীণদের অনেকেই সেই ভয়াবহ বৃষ্টির কথা এখনও ভোলেননি। তা ভোলেননি কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এদিন বৃষ্টির জল বের করতে নাকাল মেয়রও বলেন, ৭৮ সালের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।
কিন্তু কী ঘটেছিল ৭৮ সালে? ফিরে দেখা যাক। নীচে ৭৮ সালের বন্যার ভিডিও রইল ( 1978 Kolkata Flood Video)।
১৯৭৮ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে, দুর্গাপুজোর ক’দিন আগে, কলকাতা ও গোটা দক্ষিণবঙ্গ সাক্ষী হয়েছিল এক ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দুর্যোগের। ইতিহাস বলছে, একটানা বৃষ্টিতে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৩৮০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল শহরে। কলকাতার রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে ঘরবাড়ি—সব কিছুই ডুবে গিয়েছিল জলস্রোতে। সেই ভয়াবহ বন্যার স্মৃতি আজও বাঙালির কাছে গা ছমছমে এক অধ্যায় হয়ে রয়েছে।
শহর কলকাতার অবস্থা
২৫ সেপ্টেম্বর রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়। রাতভর চলা ঝড়-বৃষ্টির পর সকালেই দেখা যায়, শহরের গলিপথ থেকে বড় বড় রাস্তাঘাট, সব জায়গাতেই হাঁটু থেকে কোমর জল জমে গিয়েছে। ২৬ সেপ্টেম্বর সকাল নাগাদ প্রধান সড়কগুলিতে ২ ফুটেরও বেশি জল। লোকাল ট্রেন চলাচল স্তব্ধ, ট্রাম-বাস ডুবে অচল। কলকাতার বুকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বহু এলাকা।
বৃষ্টির জেরে শুধু কলকাতাই নয়, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, নদিয়া, মেদিনীপুর ও মুর্শিদাবাদ জেলার বড় অংশ জলের তলায় চলে যায়। কলকাতা বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলিও ঝড়-বৃষ্টির কবলে নড়বড়ে হয়ে পড়ে।শুধু বসতি এলাকা নয়, বন্যার জেরে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পাঞ্চলেও তীব্র প্রভাব পড়ে। দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট, বার্নপুরের আইআইএসসিও কারখানা, পার্শ্ববর্তী কয়লাখনি এলাকা সবই ডুবে যায় বৃষ্টির জলে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলি একের পর এক বন্ধ হয়ে পড়ে, হাজার হাজার শ্রমিকের জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে যায়।