সিইও-কে নির্দেশ জ্ঞানেশ কুমারের
আর মাত্র দু’দিন পরেই এনুমারেশন ফর্ম (Enumeration Form) কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোডের সময়সীমা শেষ হচ্ছে। ১৬ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে। এই অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেলে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (CEO) মনোজ আগরওয়ালের (Manoj Agarwal) সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠক সেরে ফেললেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার (Gyanesh Kumar)। শুধু বাংলার সিইও-ই নন, দেশের যে ১২টি রাজ্যে এসআইআর (West Bengal SIR) চলছে, সেই সমস্ত রাজ্যের সিইও-দের সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে কথা বলেন তিনি।
কমিশন সূত্রে খবর, এই বৈঠকে প্রায় দেড় মাস ধরে এসআইআর পর্বে কী কী সমস্যা হয়েছে, কোথায় কোথায় সমস্যা হয়েছে তা বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন জ্ঞানেশ কুমার। পাশাপাশি সিইও-দের থেকে কোথায় কত আন-কালেক্টেবল ফর্ম, মৃত ভোটার, স্থানান্তরিত, নিখোঁজ, সেটাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
এখানে বলে রাখা দরকার, নির্বাচন কমিশনও (ECI) নিজেদের তরফে এই সন্দেহজনক ভোটার শনাক্ত করার কাজ চালাচ্ছে। কিন্তু ঘটনা হল, তাঁদের কাছে যে পরিসংখ্যান আছে, তার তুলনায় বাংলার পরিসংখ্যান অনেক আলাদা (ECI suspected voter mismatch)। কমিশনের আশঙ্কা, এরাজ্যে সন্দেহভাজন ভোটারের সংখ্যা আরও তিনগুণ বেশি হতে পারে (West Bengal voter data)। মঙ্গলবারের এই বৈঠকে সে ব্যাপারেও সিইও-দের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এদিকে, কোনও যোগ্য নাগরিক যাতে ভোটার তালিকা থেকে বাদ না পড়েন, কোনও অযোগ্য ব্যক্তি যাতে তালিকায় ঢুকতে না পারেন এবং দাবি–আপত্তি থেকে গণনা, নোটিস নিষ্পত্তি এবং চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ— এই প্রতিটি ধাপে কঠোর পর্যবেক্ষণের জন্য দিল্লি থেকে আরও পাঁচ পর্যবেক্ষককে বাংলায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাঁরা বুধবার সকাল সকাল রাজ্যে চলে আসছেন।
এখনও অবধি যা খবর, ওই পাঁচ পর্যবেক্ষক আসার পরপরই সিইও মনোজ আগরওয়ালের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তার আগে সোমবার অর্থাৎ আজ রাত ৯টা নাগাদ সিইও এবং ডিইও-দের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। মনে করা হচ্ছে ওই পর্যবেক্ষকদের ব্রিফ বা সামগ্রিক তথ্য দেওয়ার জন্যই এই বৈঠকের তোড়জোড়।
এখানে বলে রাখা দরকার, দিল্লির পাঠানো নতুন যে স্পেশ্যাল পাঁচ পর্যবেক্ষক, তাঁরা পাঁচ ডিভিশনে নজরদারি চালাবেন। আজ সিইও-র সঙ্গে বৈঠকের পর তাঁরা বুধবার দুপুর দেড়টা নাগাদ সিইও দফতরেই বৈঠক করবেন। যেখানে উপস্থিত থাবেন স্পেশ্যাল রোল অবজার্ভার সুব্রত গুপ্ত-সহ অন্যান্য রোল অবজার্ভাররা।
বস্তুত, মঙ্গলবার পর্যন্ত কমিশনের দেওয়া তথ্য বলছে, এখনও অবধি রাজ্যে আন-কালেক্টেবল ফর্মের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫৭ লক্ষ এক হাজার ৫৪৮। যাঁদের নাম খসড়া তালিকায় থাকছে না। এর মধ্যে
- মৃত ভোটারের সংখ্যা ২৪ লক্ষ আট হাজার ৫৭৪
- খুঁজে পাওয়া যায়নি ১১ লক্ষ ২৭ হাজার ৬৪৩
- স্থানান্তরিত ভোটার ১৯ লক্ষ ৮০ হাজার ৩৯৩
- ডুপ্লিকেট ভোটার ১ লক্ষ ৩৪ হাজার ২৩২
- অন্যান্য ৫০ হাজার ৭০৬
১৬ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে। সেই তালিকা সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ এবং দাবি কমিশনে জানানো যাবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। সে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা, বিতর্কের নিষ্পত্তি করা, প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ভোটারকে শুনানিতে (হিয়ারিং) ডাকা এবং আলোচনার সাপেক্ষে সন্দেহ দূর করার কাজ ইআরও-রা করবেন ১৬ ডিসেম্বর থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।