৫ লক্ষ রসগোল্লা বনাম ৫০০ কেজি লাড্ডু, বিহারে ফলপ্রকাশের আগে মিষ্টি বিতরণে টানটান লড়াই |
সরকার গড়ার কারিগর পিকে-র ভবিষ্যৎ কোন পথে, জন সুরজ অস্তগামী না উদয়ের পথে?
সরকার গড়ার কারিগর পিকে-র ভবিষ্যৎ
অর্শ পর অথবা ফর্শ পর। অর্থাৎ হয় আকাশ নয়তো ধুলো হয়ে যাব। শেষপর্যন্ত তাঁর নিজেরই ডায়ালগই সত্যি হয়ে গেল। বিহার বিধানসভায় একলা চলো নীতি নিতে গিয়ে একেবারে ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে প্রশান্ত কিশোর ওরফে পিকে-র জন সুরজ পার্টি। এর মাঝামাঝি কোনও ফল ফলেনি, যার আঁচ তিনি নিজেই দিয়েছিলেন। কথায় আছে, কুমোর মূর্তি গড়তে পারলেও ফসল ফলাতে পারে না। পিকে-র ক্ষেত্রেও এই কথাটি সর্বতোভাবে ফলে গেল। নরেন্দ্র মোদী থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা ও টিকিয়ে রাখার কারিগর মুখ থুবড়ে পড়লেন তাঁর নিজের রাজ্যেই।
বিহার ভোটে জন সুরজ পার্টি প্রথমবার নির্বাচনে লড়ে খাতাই খুলতে পারল না। সারাদিনে একটি কেন্দ্রেও এগিয়ে যায়নি কোথাও। রাজনীতিবিদ হিসাবে পিকের এটাই প্রথম ব্যর্থতা। এই ধরনের ব্যর্থতার উপশম হিসাবে বহু বছর আগে বহুজন সমাজ পার্টির নেতা কাঁসিরাম ভাল কথা বলে গিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, প্রথম ভোটে হারবে, দ্বিতীয়টিতে পরাজয়ের কারণ হবে এবং তৃতীয়টিতে বিজয়ী হিসাবে মাথা তুলবে।
গত তিন বছর ধরে এই দিনটির জন্যই কি প্রশান্ত কিশোর অপেক্ষা করেছিলেন! ২০২২ সালের ২ অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তীর দিন তিনি মহাত্মার সত্যাগ্রহ শুরুর জায়গা চম্পারণ থেকে পদযাত্রা শুরু করেন। তারপর ৩ হাজার কিমি হেঁটেছেন বিহারের পথে পথে। ফলে এখানেই শেষ নয়, এখান থেকেই শুরু করতে চাইছেন পিকে। আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল সকলেই নন। যিনি কাঁসিরামের কথা মিথ্যে প্রমাণ করে দিয়ে অভিষেক ম্যাচেই ছক্কা হাঁকিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু দিল্লি হল একটি ছোট্ট এবং প্রধানত শহুরে এলাকা। সেখানে বিহারের মতো ভোট রাজনীতির হাজার একটা অঙ্কের খেলা নেই।
প্রথম ও প্রধান কারণ বিহারি রাজনীতিতে জাতপাতের খেলাটাই বিশাল ভূমিকা গ্রহণ করে। সেখানে প্রশান্ত কিশোরের ইস্যু ছিল চাকরি, পরিযায়ী শ্রমিক এবং বিহারিদের ফিরিয়ে আনা। তিনি বলেছিলেন, যদি জেডিইউ ২৫টির বেশি আসন পায়, তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। এমনকী এও বলেছিলেন যে, যদি জেডিইউ ২৫টির বেশি আসনে জেতে এবং জন সুরজ পার্টি সরকারও গঠন করে, তাহলেও তিনি পিছু ফিরবেন না। এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন পিকে।