উপরাষ্ট্রপতি পদের দৌড়ে কারা এগিয়ে?
ধনকড়ের পর কে? বিহার সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের মুখে এই প্রশ্নটিই এখন রাজধানীর অলিগলিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে জগদীপ ধনকড়ের আচমকা ইস্তফা দেওয়ার পর দ্রুত পরবর্তী মুখ বেছে নিতে হবে। স্বাস্থ্যের কারণে ধনকড় পদত্যাগ করছেন বলে রাষ্ট্রপতিকে জানালেও অধিকাংশের মতে, এর পিছনে বিজেপির কারিকুরি থাকতে পারে। ঘটনা যাই হোক, এই অবস্থায় যত দ্রুত সম্ভব বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটকে একজন উপরাষ্ট্রপতি মুখ বাছাই করতে হবে। কিন্তু, কে হতে চলেছেন পরবর্তী উপরাষ্ট্রপতি? এই সাংবিধানিক পদের দৌড়ে কারা রয়েছেন সামনের সারিতে? একবার চোখ বুলিয়ে দেখে নেওয়া যাক রাজনৈতিক দাঁড়িপাল্লায় কার ওজন কত!
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার
ইন্টারনেট দুনিয়ায় বর্ষীয়ান জেডিইউ নেতা তথা এনডিএ-র শরিক নীতীশ কুমার রয়েছেন সবার আগে। প্রথমত, নভেম্বরে বিহারে ভোট। দ্বিতীয়ত, এবার বিহারে প্রবল সরকার ও নীতীশ বিরোধী হাওয়া রয়েছে। ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর দিনকয়েক আগেই বলে দিয়েছন, নীতীশ কুমার আর মুখ্যমন্ত্রী হবেন না। বিহারে সরকার পালটাবেই। তৃতীয়ত, এনডিএ জোট টিকিয়ে রাখতে হলে নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী থেকে উপরাষ্ট্রপতি করা অনেক মর্যাদাসম্পন্ন। চতুর্থত, নীতীশ কুমারের বয়স ও শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যভার চালিয়ে যাওয়া নিয়ে।
সেই জায়গায় তথাকথিত স্বচ্ছ ও তরুণ প্রজন্মের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী মুখ খাড়া করতে পারে গেরুয়া নেতৃত্ব। এবং জেডিইউকে সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে দিতে পারে উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ। সেক্ষেত্রে বিহারের জাতপাতের তাস হিসেবে বিজেপি কোনও দলিত, আদিবাসী, পিছড়ে বর্গের কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদে দাঁড় করিয়ে দিতে পারে। আর নীতীশ কুমারকে শান্ত রাখতে তাঁর ছেলে নিশান্তকে উপমুখ্যমন্ত্রীর পদে বসিয়ে দিতে পারেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটি। কারও কারও অনুমান, নীতীশ কুমারকে দেশের দ্বিতীয় নাগরিক করে জগদীপ ধনকড়কে বিজেপির জাতীয় সভাপতিও করা হতে পারে।
নীতীশ কুমারের পরেই যাঁর যাঁর নাম ভাসছে তাঁরা হলেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিদায়ী বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা সহ আরও কয়েকজনের। তবে এর মধ্যে পাল্লা বেশ ভারী হরিবংশ নারায়ণ সিংয়ের। জেডিইউয়ের সাংসদ হরিবংশ নারায়ণ সিং বর্তমানে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান। অর্থাৎ তিনিই এখন ধনকড়ের অনুপস্থিতিতে উচ্চকক্ষ চালাবেন। সেই হিসেবে তাঁর নামও বাতাসে ভাসছে। জোটমর্যাদা রক্ষাও হল, আবার লাঠিও ভাঙল না। বিশেষত হরিবংশের সঙ্গে নীতীশ ও মোদীর দুজনেরই সম্পর্ক ভালো।
কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর
বেশ কয়েক মাস ধরে কংগ্রেসের তিরুবনন্তপুরমের এমপি শশী তারুরের সঙ্গে দলের সম্পর্ক ভাল যাচ্ছে না। দুপক্ষ থেকেই ঠারেঠোরে আক্রমণ চলছে। বিশেষত অপারেশন সিঁদুরের পর থেকে মোদীর প্রশংসা করায় শশীর উপর বেজায় চটেছে হাইকমান্ড। তাই মোদী চাইছেন, শশীকে এমন একটা সম্মান দিতে যাতে কংগ্রেসের পিলে চমকে যায়। এবং উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেস একঘরে হয়ে পড়ে। এমনই মত নেট দুনিয়ার। রাজধানীর রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সাংবাদিকদের মধ্যে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে যে, দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও শশী তারুর সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন। এমনকী কেউ কেউ প্রবীণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়করির নামও জল্পনায় রেখেছেন। তবে যাই হোক সংবিধান অনুসারে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন সেরে ফেলতেই হবে সরকারকে।