মুরগির পাতলা ঝোল নয়, বরং রেঁধে ফেলুন চিকেন হটপাঞ্চ, জেনে নিন রেসিপি |
প্রশান্ত কিশোর কি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন? বড় প্রশ্নের মুখে পিকে-র কেরিয়ার
প্রশান্ত কিশোর কি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন?
রাজনীতি ও সমাজ জীবনে কিছু কিছু মানুষের উল্কার মতো উত্থান ঘটে। বহু ক্ষেত্রে দেখা যায় তার ধারাবাহিকতা থাকে না। কিছু দিন রম রম করে চলে। কাউকে বা অতিশয় আত্মবিশ্বাস গ্রাস করে ফেলে। খুব কতিপয় কয়েকজন কিম্বদন্তী হতে পারেন। প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishore) আকা পিকে যেন তেমনই এক সন্ধিক্ষণের মুখে দাঁড়িয়ে। মঙ্গলবার বিহার ভোটের (Bihar Election 2025) দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। সন্ধেয় বেশ কিছু বুথ ফেরত সমীক্ষাও (Bihar Exit Poll) প্রকাশ হয়েছে। এবং তার পর থেকেই প্রশান্ত কিশোরের একটি কথা ভূতের মতো তাড়া করে ফিরছে তাঁকে।
কী সেই প্রশ্ন, প্রশান্তের ভবিষ্যৎ কী সেটাই এই প্রতিবেদনের বিষয়। গুজরাতের তখত থেকে নরেন্দ্র মোদীকে সাউথ ব্লকে পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় উতরে দেওয়ার অন্যতম কাণ্ডারি ছিলেন পিকে। উনিশের ধাক্কা সামলে একুশের ভোটে তৃণমূলকে দু’শ পার করানোর কারিগরিও তাঁরই ছিল। সেই প্রশান্ত কিশোর ভোট কুশলীর কাজ ছেড়ে বিহারে তাঁর নিজের দল গড়েছেন—জন সুরাজ। বিহার ভোটে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় প্রার্থী দিয়েছেন তিনিই। কিন্তু অধিকাংশ বুথ ফেরত সমীক্ষাই জানান দিচ্ছে যে পিকে-র পার্টি প্রচারে ঝড় তুললেও ভোট বাক্সে কোনও প্রভাব ফেলতেই পারবে না। উল্টে যে নীতীশ কুমারকে তিনি এই ভোটে নিশানা করে নিয়েছিলেন, সেই প্রবীণ কুর্মি নেতা ফের ভেল্কি দেখাতে পারেন। বিহারে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হয়ে উঠতে পারে সংযুক্ত জনতা পার্টি।
তাহলে? একুশের ভোটে প্রশান্ত কিশোরের একটা কথা খুব ভাইরাল হয়েছিল। ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার আগে পিকে বলেছিলেন, বিজেপি ১০০ পার করতে পারবে না। বিজেপি যদি তা পারে, তা হলে ভোট কুশলীর কাজ ছেড়ে দেব। পিকে-র কথা অক্ষরে অক্ষরে মিলে যায়। তার ফলে রাজনীতিতে প্রশান্ত কিশোরের দর বাড়ে। অনেকে ধরেই নেন, তিনি হলেন এ সময়ের চাণক্য।
সেই প্রশান্ত কিশোর এবার বিহার ভোটে দাবি করেছিলেন, এটাই নীতীশ কুমারের শেষ ভোট। সেই সঙ্গে এও বলেছিলেন, নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা পার্টি ২৫টির বেশি আসনে জিতবে না। বিহার বিধানসভায় ২৪৩টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে নীতীশের সংযুক্ত জনতা পার্টি লড়েছে ১০১টি আসনে। সন্দেহ নেই নীতীশ ২৫ অতিক্রম করতে না পারলে এনডিএ জোট মুখ থুবড়ে পড়বে।
কিন্তু ঘটনা হল, মঙ্গলবার সন্ধে থেকে যে সব বুথ ফেরত সমীক্ষা প্রকাশ হয়েছে তার অধিকাংশেরই পুর্বানুমান হল, এনডিএ স্যুইপ করতে পারে। যেমন দৈনিক ভাস্কর তাদের বুথ ফেরত সমীক্ষায় জানিয়েছে, এনডিএ পেতে পারে ১৪৫ থেকে ১৬০টি আসন, আর মহাগঠবন্ধনের দখলে যেতে পারে ৭৩ থেকে ৯১টি আসন। ম্যাট্রিজ এর অনুমান অনুযায়ী, এনডিএর ঝুলিতে ১৪৭ থেকে ১৬৭টি আসন যেতে পারে, আর বিরোধী জোট পেতে পারে ৭০ থেকে ৯০টি আসন। পিপলস ইনসাইট বলছে, এনডিএ পেতে পারে ১৩৩ থেকে ১৪৮টি আসন, আর মহাগঠবন্ধন পেতে পারে ৮৭ থেকে ১০২টি আসন।
এই সব সমীক্ষার ফলাফল প্রকৃত ফলাফলের সঙ্গে মিলে গেলে অনিবার্য ভাবেই নীতীশের ভাল ফল করার কথা। শুধু তা নয়, এবার বিহারে বাম্পার পোলিং হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, আগের ভোটের তুলনায় ১২ শতাংশ মহিলা বেশি ভোট দিয়েছেন। যে হেতু গত ২০ বছর ধরে লাগাতার নীতীশ মহিলা ভোট ব্যাঙ্ককে সযত্নে লালন করেছেন, এবং এবার ভোটের আগে মহিলাদের অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা করে পাঠিয়েছেন, তাই ভোট বিশ্লেষকরা ধরেই নিচ্ছেন, বাড়তি মহিলা ভোট নীতীশের পক্ষেই গেছে।