শবরীমালায় আয়াপ্পা মূর্তি ঘিরে রহস্যে উত্তাল কেরল
ভগবান কি কখনও রোগা হতে পারেন? প্রশ্নটা এখন ঘুরছে কেরলের শবরীমালা মন্দিরে। ভক্তদের মতে, এটা অসম্ভব। আদালতও বলছে, এমন ঘটনা হওয়া উচিত নয়। কিন্তু তথ্য বলছে, ভগবান আয়াপ্পার ওজন সত্যিই কমেছে।
২০১৯ সালে শবরীমালা মন্দিরে ভগবান আয়াপ্পার মূর্তির ওজন ছিল ৪২ কেজি ৮০০ গ্রাম। বর্তমানে সেই ওজন দাঁড়িয়েছে ৩৮ কেজি ২৫৮ গ্রাম, অর্থাৎ ৪ কেজিরও বেশি কম। এই পার্থক্য নজরে আসে ২০২৪ সালে এক ভক্তের। তাঁর দাবি, মূর্তিকে আগের তুলনায় রোগা লাগছে। প্রথমে তিনি মন্দির কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন। সন্তোষজনক উত্তর না পেয়ে কেরল হাইকোর্টে মামলা করেন।আদালতের নির্দেশে মূর্তির ওজন মাপা হয়। দেখা যায়, ওজন সত্যিই কমেছে। কিন্তু কীভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি দেবস্মম বোর্ড। তাদের বক্তব্য, ২০১৯ সালে মূর্তি মেরামতের জন্য পাঠানো হয়েছিল। হয়তো তখনই ওজন কমে যায়।
মেরামতির দায়িত্বে থাকা সংস্থা জানিয়েছে, মূর্তি ওজন করে নেওয়া হয়েছিল এবং সম্পূর্ণ খুঁটিনাটি মেনে ফেরত দেওয়া হয়েছে। মেরামতির পর কিছু সোনা বেঁচে গিয়েছিল, যা মন্দিরের দেওয়ালে লাগানোর কথা থাকলেও তা আর করা হয়নি। এর ফলেই মূর্তির ওজন কমেছে বলে আশঙ্কা।আরও জটিলতা তৈরি হয়, যখন জানা যায়, মন্দিরের এক ট্রাস্টি আয়াপ্পাকে উপহার দেওয়া সোনার কিছু অংশ ফেরত চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেই চিঠি মন্দির কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করলেও, পরে কী হয়েছে তা অজানা।
কেরল হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) তদন্তে নেমে একাধিক অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে। তাঁদের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, ঘটনায় বড়সড় গরমিল আছে। অথচ মন্দির কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, তারা কিছুই জানে না।
সব মিলিয়ে আয়াপ্পার ওজন কমে যাওয়া এবং সোনা রহস্য ঘিরে তোলপাড় কেরল। ভক্তদের বিশ্বাসে আঘাত লেগেছে। প্রশ্ন উঠছে, এত সুরক্ষিত মন্দিরে কীভাবে এই ঘটনা ঘটল? মন্দির কর্তৃপক্ষের অজানা থাকার দাবি নিয়েও সন্দেহ বাড়ছে।বিশেষজ্ঞদের মতে, মূর্তির সোনা চুরি করা মন্দিরের অভ্যন্তরীণ মদত ছাড়া সম্ভব নয়।