‘ধোনিই আমার রোলমডেল!
একদিকে ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনি। বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক, সমর্থকদের নজরে ‘ক্যাপ্টেন কুল’। যিনি যে কোনও পরিস্থিতি মাথা ঠান্ডা রেখে সামাল দিতে জানেন।
অন্যদিকে পাকিস্তানের তরুণ অধিনায়ক ফাতিমা সানা। বয়সে কম, অভিজ্ঞতায় সীমিত। কিন্তু অনুপ্রেরণার জায়গা, রোলমডেলের আসনটা একেবারে পাকা—ধোনির মতোই চাপের মুহূর্তে মাথা ঠান্ডা রাখতে চান তিনি। তাঁকে অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে চান।
যুদ্ধ পরিস্থিতি, নাশকতা, কূটনৈতিক টানাপড়েন—ভারত-পাকিস্তান দু’দেশের তিক্ততা বাড়তে বাড়তে আকাশ ছুঁয়েছে। যা ছাপ ফেলেছে ময়দানের লড়াইয়েও। আজ এই টিম বয়কট করে তো কাল ওই টিম আসতে নারাজ! এই হুমকি আর হুঁশিয়ারির কাঁটাতার ডিঙিয়ে মৈত্রীর বার্তা, হয়তো-বা অলক্ষেই, কোনও উদ্দেশ্য ছাড়াই পৌঁছে দিয়েছেন ফাতিমা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পাক মহিলা ক্রিকেট টিমের অধিনায়কের এভাবে খোলামেলা কায়দায়, প্রকাশ্যে ধোনিকে বেছে নেওয়া নিছকই ‘ক্রিকেটীয় পছন্দ’ নয়, এর গভীর প্রতীকী তাৎপর্য রয়েছে। পাকিস্তানে মেয়েদের খেলাধুলো এখনও প্রান্তিক, কেরিয়ার হিসেবে না সমাজে, না পরিবারে, কোনও স্বীকৃতি নেই। সেখানে একজন তরুণ অধিনায়ক যদি বলেন—‘অধিনায়কত্ব পেয়েই ভেবেছি, আমায় ধোনির মতো হতে হবে’, তাহলে তা হয়ে ওঠে পরিবর্তনের দিশারী। ধোনির ঠান্ডা মাথা, বিচক্ষণতা, পরিণতবুদ্ধি, সিদ্ধান্ত নেওয়ার তীক্ষ্ণতা আর সতীর্থদের প্রতি ভরসা পড়শি মুলুকের ক্রিকেট পরিমণ্ডলে নতুন এক ন্যারেটিভ তৈরি করতেই পারে।
এই মাসের শেষেই শুরু হচ্ছে মহিলাদের ওয়ান ডে বিশ্বকাপ। আয়োজক ভারত ও শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তান নিজেদের সব ম্যাচ খেলবে দ্বীপরাষ্ট্রে। প্রথম খেলা ২ অক্টোবর, কলম্বোয় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। কোয়ালিফায়ার পর্বে অপরাজিত পাকিস্তান, ফলে প্রত্যাশা যথেষ্ট উঁচুতে।
বিশ্বকাপের আগে পিটিআই ভাষাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফাতিমা বলেন, ‘বড় টুর্নামেন্টে অধিনায়ক হলে শুরুর দিকে নার্ভাস লাগাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমি মহেন্দ্র সিং ধোনির থেকে প্রেরণা নিই। ওঁর ম্যাচ ম্যানেজমেন্ট, শান্ত স্বভাব আর খেলোয়াড়দের উপর আস্থা রাখার ধরন থেকে অনেক কিছু শেখার রয়েছে। যখন অধিনায়ক হলাম, ভেবেছি—আমাকে ধোনির মতো হতে হবে। ওঁর ইন্টারভিউ দেখেছি, অনেক কিছু শিখেছি!’