হাঁটু মুড়ে স্মৃতিকে প্রোপোজ পলাশের
প্রিলিউডটা ছিল সাদামাটা। বোঝা যায়নি, ক্লাইম্যাক্সে কী আসতে চলেছে।
স্মৃতি মান্ধানা (Smriti Mandhana) কিছুদিন আগেই যে মাঠে বিশ্বকাপ (World Cup) জিতলেন, সেখানেই ঢুকলেন কাল। সমর্থকদের হইচই, সতীর্থদের ডাকাডাকি—কিচ্ছুটি নেই৷ চারপাশ চুপচাপ। শুনশান। ঘুরঘুট্টি অন্ধকার। ফ্লাডলাইট জ্বলেছে বটে। কিন্তু ততক্ষণে তাঁর চোখ বাঁধা কাপড়ে। হাত ধরে এগিয়ে নিয়ে এলেন প্রেমিক, এতদিনে ‘ঘোষিত’, পলাশ মুচ্ছল (Palash Muchhal)। স্মৃতি তখনও জানেন না, কোথায় তিনি৷ চারপাশে কী ঘটে চলেছে।
অতঃপর যবনিকা পতন। ব্লাইন্ডফোল্ড খুলে নেওয়া হল। চোখ মেলে চারদিকে তাকাতে বিস্ময়। যা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিলেন পলাশ। থিতু হতে না দিয়েই, বাইশ গজে যখন দাঁড়িয়ে স্মৃতি, নিজে হাঁটু মুড়ে বসে পড়লেন। মেলে ধরলেন আংটি। কী বললেন, ভিডিওতে হুবহু বোঝা গেল না ঠিকই৷ কিন্তু বিজ্ঞজনের আত্মবিশ্বাসী অনুমান—‘উইল ইউ ম্যারি’ ছাড়া আর কিচ্ছুটি বলা সেই মুহূর্তে অসম্ভব!
জবাবটা অবশ্য অজানা নয়। প্রোপোজালের ভিডিও শেয়ার করে ক্যাপশনে স্মৃতির উত্তরটি লিখে দিয়েছেন পলাশ: ‘সি সেড ইয়েস!’ যা ইতিমধ্যে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। পরপর যা ঘটল, তাকে নিখাদ সিনেমা ছাড়া আর কী বলা যায়! স্মৃতির গালে তখনও আনন্দের অশ্রু। মুছে যায়নি। বিস্ময়, আনন্দ, উত্তেজনা—সব মিলেমিশে এক রোম্যান্টিক সিকোয়েন্স। আংটি হাতে নিয়ে ফিক করে হেসে ফেললেন তিনি। তারপর নিজেই পলাশের আঙুলে পরিয়ে দিলেন। দুই হাত তুলে দু’জনেই দেখালেন: ‘হ্যাঁ, আমরা প্রস্তুত!’ মাঠ, আলো, খালি স্ট্যান্ড—সব মিলে পুরো ময়দানজুড়ে বেজে উঠল নিখুঁত সিম্ফোনি।
চারপাশে তখন শব্দের বিস্ফোরণ। ফ্লাডলাইটের আলোয় গা ভাসিয়ে বাইশ গজে ছুটে এলেন বন্ধু-বান্ধব, সতীর্থরা। কেউ নাচছে, কেউ তালি দিচ্ছে, কেউ বিহ্বল চোখে চেয়ে। পলাশের বোন, গায়িকা পলক মুচ্ছল (Palak Muchhal) যোগ দিলেন এই হঠাৎ উৎসবে। স্মৃতির কাঁধে হাত রেখে বললেন—‘ওয়েলকাম টু দ্য ফ্যামিলি!’
প্রেমের এই গল্প কিন্তু আচমকা তৈরি হয়নি। সম্পর্কের জল্পনা জমে উঠেছিল অনেক আগেই। ইন্দোর প্রেস ক্লাবে পলাশ যখন বলেছিলেন—‘ও খুব শিগগিরই ইন্দোরের বউমা হবে!’ তখনই ছবিটা পরিষ্কার ছিল। স্রেফ অপেক্ষা ছিল দিনের। বিশ্বকাপ জয়ের পর তাঁর ‘SM18’ ট্যাটু—স্মৃতির নামের অক্ষর আর জার্সি নম্বর (jersey number)—আরও বাড়িয়ে দেয় গুঞ্জন।
বিয়ের দিন ঠিক… ২৩ নভেম্বর (wedding date)। প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তাও পৌঁছে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু ‘কাউন্টডাউন’। বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে লক্ষ মানুষের মন জয় করা স্মৃতি এবার নামছেন জীবনের নতুন ইনিংসে।
তবে এতকিছুর মধ্যে এটা বলতেই হয়—প্রোপোজালটা ঠিক সেই ধরনের মুহূর্ত, যা একশোখানা কভার ড্রাইভ কিংবা গ্যালারি-ডিঙোনো ছক্কাকেও হার মানাবে। এখানে নেই জোরালো স্ট্রোক, নেই টেকনিক, নেই ট্যাকটিক্স। আছে দু’জন মানুষের নিখাদ ভালোবাসা। আর ক্রিকেটের পবিত্র ২২ গজ, যেখানে স্মৃতি হয়তো জীবনের সবচেয়ে বড় ম্যাচ খেললেন… ব্যাট হাতে নয়, হৃদয় নিংড়ে!