দেউড়ি মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে পৌরাণিক বিশ্বাস
সম্প্রতি মহেন্দ্র সিং ধোনির একটি ভিডিও (MS Dhoni) ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ভারতীয় ক্রিকেটের প্রাক্তন অধিনায়ক ধোনি তাঁর স্ত্রী সাক্ষী ও মেয়ে জিভাকে নিয়ে ঝাড়খণ্ডের অতি প্রাচীন একটি মন্দিরে গিয়ে পুজো দিচ্ছেন।
সপরিবারে মাহি গিয়েছিলেন রাঁচির (Ranchi) কাছে অবস্থিত দেউড়ি মন্দিরে (Deori Temple)। এই মন্দির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থান। এবারই অবশ্য প্রথম নয়, সেখানে গিয়ে এমএস ধোনি প্রায়শই আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন। বিশ্বাস করা হয় যে, দেউড়ি মাতা অধিষ্ঠাত্রী দেবতা। তিনি সকল ইচ্ছা পূরণ করতে পারেন। বিশেষ করে বড় টুর্নামেন্ট বা কঠিন ম্যাচের আগে এই মন্দিরে অনেকবারই এসে দেউড়ি মাতার আশীর্বাদ নিয়েছেন ধোনি। মন্দিরটি উপজাতি এবং ব্রাহ্মণ উভয় ধরনের পুরোহিতদের থাকার জন্যও উল্লেখযোগ্য।
আইপিএল ২০২৫-এর ব্যস্ত মরশুমের পর, ভারতকে দু’টি বিশ্বকাপ (২০০৭ টি-টোয়েন্টি ও ২০১১ ওডিআই) এনে দেওয়া অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি স্ত্রী সাক্ষী এবং মেয়ে জিভাকে নিয়ে রাঁচির মা দেউড়ি মন্দিরে পৌঁছে পুজো দেন। তিনি ও সাক্ষী মন্দিরের প্রথা অনুযায়ী সমস্ত রীতি মেনেই মায়ের কাছ থেকে আশীর্বাদ নেন। আর সেই ভিডিওই এখন ভাইরাল।
আসলে ধোনি বহু বছর ধরে এই মন্দিরে আসেন মায়ের আশীর্বাদ নিতে। তবে, এবার তিনি এসেছিলেন তাঁর পরিবারের সঙ্গে। ধোনির উপস্থিতির খবর পেয়ে মন্দিরের বাইরে প্রচুর সংখ্যক মানুষ জড়ো হন। প্রিয় মানুষকে কাছে পেয়ে তাঁরা আবদার করেন সেলফি তোলার। জেলা প্রশাসনকে অবশ্য ধোনির মন্দিরে আসার কথা আগেই জানানো হয়েছিল। তাই বিপুল সংখ্যক পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল মন্দির চত্বরে।
ঝাড়খণ্ডের মা কালীর এই মন্দিরটি সকলের মুখে মুখে। এখানে ১৬টি বাহু বিশিষ্ট মা কালীর সাড়ে তিন ফুট উঁচু মূর্তি রয়েছে। এই মন্দিরটি রাঁচির অন্যতম পরিচয় হয়ে উঠেছে। এই মন্দির সম্পর্কে দু’টি গল্প প্রচলিত রয়েছে।
প্রথম গল্প অনুসারে, ঝাড়খণ্ডের তামারে অঞ্চলে একজন রাজা ছিলেন। তাঁর নাম ছিল কেরা। যুদ্ধে হেরে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার পথে তাঁর স্বপ্নে দেবী এসে উপস্থিত হন। তিনি রাজাকে তাঁর মন্দির তৈরি করতে বলেন। এর পরে, রাজা মন্দিরটি তৈরি করেন এবং তাঁর রাজ্য ফিরে পান।
পৌরাণিক বিশ্বাস কী?
অন্য একটি গল্প অনুসারে, এই মন্দিরটি প্রায় ৭০০ বছরের পুরনো। এর নির্মাণকাল দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে বলে জানা যায়। বলা হয় যে, কেউ এই মন্দিরটি নির্মাণ হতে দেখেননি। প্রচলিত কাহিনি অনুসারে একজন ভক্ত রাতে স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি সকালে ঘুম থেকে উঠে বনে মন্দিরটি খুঁজতে শুরু করেন।
অনেক পরিশ্রমের পর, তিনি ঘন জঙ্গলের মাঝখানে একটি মন্দির দেখতে পান। এটি দেখে তিনি হতবাক হয়ে যান। এরপর তিনি গ্রামবাসীদের এই মন্দির সম্পর্কে অবহিত করেন। সেই থেকে মন্দিরে পুজো করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে, এখানে সৎ মন নিয়ে পুজো করলে ভক্তদের সমস্ত ইচ্ছা পূরণ হয়।