বাংলায় ১০০টা ‘সিনেমা ঘর’ বানাচ্ছেন প্রসেনজিৎ, খুশি মমতা
মহানায়ক সম্মান প্রদান মঞ্চ আলো করে তখন বসে গৌতম ঘোষ থেকে ইমন চক্রবর্তী, গার্গী রায়চৌধুরী থেকে রূপঙ্কর বাগচি। একপাশে বসেছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। পরনে গ্রে ট্রাউজারের সঙ্গে একটা হোয়াইট ক্যাজুয়াল শার্ট। চোখে কালো চশমা। আচমকাই তঁার কার্যক্রম নিয়ে মঞ্চে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দে্যাপাধ্যায়ের ঘোষণা। যা শুনে কিছুটা হতচকিতই প্রসেনজিৎ।
তঁার একটি প্রযোজনা সংস্থা রয়েছে। তিনি যে সেই পরিধি বাড়িয়ে এবার পুরোদস্তুর সিনেমা হলের ব্যবসাতেও নেমে পড়তে চলেছেন তা কে জানত! বৃহস্পতিবার মহানায়ক সম্মান দেওয়ার অনুষ্ঠানে সেই কথাটা জানা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ থেকেই। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রসেনজিৎ একটা ভালো মডেল করেছে। অফিসাররা দেখে এসে আমাকে বলেছে। প্রায় ১০০টা জায়গায় ৪০-৫০ জনের বসার মতো একটা সিনেমা ঘর বানাচ্ছে ও। ওই হলটা দেখে আমরা খুশি হয়েছি।’’
এভাবে সিনেমা ঘর হল তা যে আরও ছড়িয়ে পড়বে সেকথাও মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন। তঁার কথায়, ‘‘এটা যদি হয় তাহলে বুথ স্তরে তৃণমূল স্তরে বা প্রত্যন্ত এলাকার আরও বেশি মানুষ সিনেমা দেখতে পাবে। আর ওরা যে ছবিগুলো বানাচ্ছে সেগুলো মার্কেটও পাবে। কর্মসংস্থানেরও সুযোগ তৈরি হবে।’’
ধনধান্য স্টেডিয়ামে এদিন হাজির ছিলেন অভিনেতা অভিনেত্রী থেকে পরিচালক, নির্দেশক। বলা ভালো টলিউডের সর্বস্তরের মানুষজন। আর তঁাদের সামনেই বাংলা সিনেমা -সিরিয়ালকে আরও মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে তঁার পরিকল্পনার কথা শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে টেলিভিশনের ধারাবাহিকগুলির বিষয়বস্তু নিয়ে এদিন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মমতা। এবিষয়ে প্রযোজক ও পরিচালকদের প্রতে্যককেই আরও একটি সহনশীল হতে বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সিরিয়ালে সারাক্ষণ বিষ দেওয়া, ঝগড়া, গুন্ডামি— এসব দেখানো হচ্ছে। এতে বাচ্চারা ভুল শিখছে, অনেকে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে।’’ প্রযোজক ও পরিচালকদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘দয়া করে খারাপ কিছু শেখাবেন না। এটার দিকে নজর দিন। শুধুমাত্র সিরিয়াল টানতে গেলে রোজ গণ্ডগোল দেখাতে হবে, এটা ঠিক নয়। কত ভাল জিনিস রয়েছে, সেগুলিও দেখানো যায়। মানুষ বিনোদনের জন্য সিরিয়াল দেখে। আমিও দেখি। কিন্তু রোজ অশান্তি ভালো লাগে না।’’
এদিন মহানায়ক শ্রেষ্ঠ সম্মান ২০২৫ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে পরিচালক গৌতম ঘোষকে। পদ্মানদীর মাঝি, মনের মানুষ, পার, অন্তর্জলী যাত্রার মতো উল্লেখযোগ্য ছবি তিনি পরিচালনা করেছেন। বাংলা চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এই পুরস্কার তঁাকে সরকারের তরফে দেওয়া হল। এছাড়া অভিনয়ের জন্য মহানায়ক সম্মান দেওয়া হয়েছে অভিনেত্রী গার্গী রায়চৌধুরীকে। ইতি মৃণালিনী, খাদ, হামি-র মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিবেশন করে মহানায়ক সম্মান এবার পেলেন ইমন চক্রবর্তী। রবীন্দ্রসঙ্গীত, বাংলা আধুনিক গান সবেতেই পারদর্শী তিনি। এই একই সম্মান পেয়েছেন রূপঙ্কর বাগচিও।