প্রিয়জনের শেষযাত্রায় মহিলারা কি শ্মশানে যেতে পারেন? শাস্ত্রে কী লেখা? নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী বললেন…
প্রিয়জনের শেষযাত্রায় মহিলারা কি শ্মশানে যেতে পারেন
প্রাচীন রীতি ও বিশ্বাসের সঙ্গে জড়িত মৃতদেহ সৎকারের সময় মহিলাদের শ্মশানে যেতে নিষেধ করা হয়। এমনটা হিন্দুধর্মে, বছরের পর বছর হয়ে আসছে। সাধারণত মৃতদেহ সৎকারের জন্য শ্মশানে যাওয়ার সময় পুরুষদের যেতে উৎসাহিত করা হয়। কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে তেমন বিষয় নেই। শাস্ত্র বলছে, মহিলাদেরও শ্মশানে যাওয়ার অনুমতি রয়েছে। এ বিষয়ে কী বলছেন ভারতীয় মহাকাব্য ও পুরাণ বিশেষজ্ঞ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী?
সময় যতই এগিয়ে চলুক, এখনও একাধিক পরিবারে মহিলাদের শ্মশানে যেতে নিষেধ করা হয়। তবে এ নিয়ে শাস্ত্র কী বলছে? সত্যিই কি শবদেহ সৎকারের সময় মেয়েদের শ্মশানে যেতে নেই? ভারতীয় মহাকাব্য ও পুরাণ বিশেষজ্ঞ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী এই নিয়ে জানিয়েছেন। নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী বলেন, ‘আমাকে অনেকে জিজ্ঞাসা করেন, মেয়েরা কি শ্মশানে যেতে পারে?’ এর উত্তরে তিনি সেই সকল প্রশ্নকর্তাদের জানান, এই প্রশ্নটাই কেন? কারণ এর প্রমাণ রয়েছে। বৈদিক মন্ত্রে এর উল্লেখ রয়েছে।
যে মহিলারা শ্মশানে যান, তাঁদের কাজল লাগানোর প্রথা রয়েছে
নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী বলেন, ‘একজন মারা গেলে সেই ব্যক্তিকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর যখন তাঁকে দাহ করা হবে, অন্ত্যোষ্টির সময় গুরুজনেরা মহিলাদের বেশ কিছু কথা বলে থাকেন। সেই সময় গুরুজনরা বলে থাকেন, যে সকল অবিবাহিত মহিলারা এখানে রয়েছেন, তাঁরা চোখে কাজল লাগান। এবং অন্যত্র একটু কাজল লাগান।’
ভারতীয় মহাকাব্য ও পুরাণ বিশেষজ্ঞ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীর এই কথা থেকে একটা বিষয় খুব পরিষ্কার যে, শাস্ত্রে নারীদের শ্মশানে যাওয়ার উপর কোনওরকম নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু বর্তমান সমাজে এখনও অনেক মানুষ রয়েছেন যারা নারী ও পুরুষদের একই দৃষ্টিতে দেখেন না। আর যে কারণে এই সকল ভেদাভেদের প্রসঙ্গ আসে। এমনটাই মত বিজ্ঞজনদের। যদিও সময়ের সঙ্গে এই রীতি বদলাচ্ছে। আজকের দিনে, এই প্রথার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেমন যুক্তিযুক্ত, তেমনি প্রতিটি পরিবারে ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও সম্মানবোধের জায়গাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।