স্কিন থেকে হেলথ— জানুন কী করবেন, কোনটি নয়
শীতকাল শিশুদের জন্য যেমন আনন্দের, তেমনই চ্যালেঞ্জের সময়। ঠান্ডা হাওয়া, ধুলোবালি, শুষ্ক পরিবেশ—সব মিলিয়ে বাচ্চাদের ত্বক দ্রুত রুক্ষ হয়ে যায়। একই সঙ্গে ঠান্ডা লাগা, কাশি-সর্দির ঝুঁকিও বেড়ে যায়। তাই শীতে শিশুদের স্কিন কেয়ার থেকে শুরু করে সামগ্রিক স্বাস্থ্য, প্রতিরোধ ক্ষমতা সবই প্রয়োজন একটু বাড়তি যত্ন। এই মরসুমে কোন অভ্যাস বাচ্চাদের সুরক্ষিত রাখবে? কোন উপায়ে ত্বক ময়েশ্চারাইজ, শরীর উষ্ণ ও রোগ প্রতিরোধী থাকবে? দেখে নেওয়া যাক শীতকালীন শিশুদের যত্নের (Baby Care) কিছু টিপস।
১) ময়েশ্চারাইজেশন: শীতেও নরম ত্বকের চাবিকাঠি
শীতল আবহাওয়ায় শিশুর নরম ত্বক সবচেয়ে বেশি শুকিয়ে যায়। স্নানের ঠিক পরেই হালকা, সুগন্ধহীন বেবি লোশন বা ক্রিম লাগানো ভাল। অ্যালোভেরা, কোল্ড-ক্রিম বাটার, মিল্ক-বেসড ময়শ্চারাইজারের প্রভাব বেশি সময় ধরে। খুব ঠান্ডায় দিনে দু’বার ময়শ্চারাইজার লাগানো শিশুর ত্বককে রক্ষা করে।
২) কম কিন্তু হালকা-গরম জলে স্নান
অতিরিক্ত গরম জল শিশুর স্কিনের ন্যাচারাল অয়েল নষ্ট করে দেয়, ফলে ত্বক আরও শুষ্ক হয়। শীতে সপ্তাহে ৩–৪ দিন স্নান করানোই যথেষ্ট। দীর্ঘক্ষণ জলে রাখবেন না শিশুকে। হালকা-গরম জল ও মাইল্ড বেবি ওয়াশ ব্যবহার করুন।
৩) লেয়ারিং ড্রেসিং: শিশুকে অতিরিক্ত মোটা পোশাক নয়
অনেকেই ভুল করে শিশুকে খুব বেশি মোটা পোশাক পরিয়ে দেন। এতে ঘেমে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। একাধিক পাতলা স্তরের পোশাক (লেয়ারিং) বেশি কার্যকর। সুতির জামার সঙ্গে হালকা সোয়েটার, টুপি ও মোজা—শীত সামলানোর জন্য যথেষ্ট। ঘরের ভেতরে অতিরিক্ত মোটা পোশাক না পরানোই ভাল।
৪) শীতের ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধ: প্রতিদিনের রুটিনই আসল
শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শীতে একটু দুর্বল থাকে। গরম জল বা হালকা গরম জল খাওয়ানো (বয়স অনুযায়ী)। ঘরকে ধুলোমুক্ত রাখা। বাচ্চা ঘেমে গেলে সঙ্গে সঙ্গে জামা বদলে দেওয়া। ঠান্ডা বাতাসে সরাসরি বের করা এড়িয়ে চলুন, বিশেষ করে সকালে ও রাতে।
৫) ইমিউনিটি বুস্টিং খাবার খুব কার্যকর
শীতের কিছু খাবার শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। গুড়, মধু (বয়স ১ বছরের বেশি হলে), আমলকি জুস, হালকা-গরম দুধ, খেজুর, স্যুপ (ডাল, মিক্স ভেজ, চিকেন—বয়স উপযোগী), মরসুমি ফল যেমন কমলা, আপেল, পেয়ারা, এগুলো ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, এসব খাবার শিশুর দেহ উষ্ণ রাখে ও ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধ করে।
৬) লিপ ও চিক কেয়ার অপরিহার্য
শিশুর ঠোঁট ও গাল খুব দ্রুত ফেটে যায়। মাইল্ড বেবি লিপ বাম, সামান্য পেট্রোলিয়াম জেলি, নারকেল বা বাদাম তেল দিয়ে গাল ম্যাসাজ, নিয়মিত যত্নেই থাকে নরম ও ফাটাহীন।
৭) ঘরের ভেতর আর্দ্রতা বজায় রাখা
শীতকালে ঘরের বাতাস খুব শুষ্ক হয়। শিশুদের স্কিন ও শ্বাসযন্ত্রে প্রভাব পড়ে। ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা যায়। জলভরা একটি বাটি ঘরে রাখলে আর্দ্রতা কিছুটা বজায় থাকে। শিশুটি ঘুমানোর ঘরে খুব বেশি হিটার ব্যবহার করবেন না।
৮) স্কিন র্যাশ হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা
শীতে রুক্ষ ত্বকে স্কিন র্যাশ বা লালচে দাগ দেখা দিতে পারে। সুতির জামা ব্যবহার করুন। অ্যালার্জি বা র্যাশ বাড়লে শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।