টেস্টি পিঠে খেতে মন চাইছে?
শীতকাল মানেই বাঙালির রান্নাঘরে পিঠে-পুলির (Pithe Puli) মিষ্টি সুবাস। কনকনে ঠান্ডায় গরম গরম পিঠে খাওয়ার মজাই আলাদা। আর এই পিঠে-পুলির মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় ও সহজলভ্য হল পাটিসাপটা (Patishapta)। হালকা নরম পাটিসাপটার ভেতরকার ক্ষীর বা নারকেলের পুর মুখে দিলেই মন ভরে যায়। যদিও মনে হয় এটা বানানো বেশ ঝামেলার কাজ, কিন্তু সঠিক রেসিপি জানা থাকলে বাড়িতে খুব সহজেই তৈরি করা যায় এই ঐতিহ্যবাহী পিঠে।
চলুন শিখে নেওয়া যাক কীভাবে অতি সহজে এই সুস্বাদু পাটিসাপটা তৈরি করে আপনিও আপনার শীতের সান্ধ্যকালীন জলখাবারকে আরও মধুময় করে তুলবেন।
পাটিসাপটা রেসিপি
পাটিসাপটা তৈরি করতে প্রধানত দুটি অংশ থাকে। ১) পিঠের ব্যাটার এবং ২) পুর বা ক্ষীর।
ক্ষীর বা পুর তৈরির উপকরণ:
নারকেল কোরা ১ কাপ, গুঁড়ো দুধ ১/২ কাপ (অথবা খোয়া ক্ষীর), গুড় (খেঁজুরের বা আখের) ৩/৪ কাপ (স্বাদমতো কম-বেশি করা যেতে পারে), এলাচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ, জল বা দুধ ২-৩ টেবিল চামচ।
ক্ষীর তৈরির পদ্ধতি:
একটি প্যানে জল বা সামান্য দুধ দিয়ে গুড় গলিয়ে নিন। গুড় গলে গেলে তাতে নারকেল কোরা যোগ করুন এবং মাঝারি আঁচে ভালোভাবে মেশান। মিশ্রণটি ঘন হয়ে এলে গুঁড়ো দুধ এবং এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে দিন। পুর যখন কড়াইয়ের গা ছেড়ে আসতে শুরু করবে এবং আঠালো হয়ে যাবে, তখন নামিয়ে ঠান্ডা করুন। এটিই আপনার পাটিসাপটার সুস্বাদু পুর।
পিঠের ব্যাটার তৈরির উপকরণ:
চাল গুঁড়ো (আতপ চালের) ১ কাপ, ময়দা ১/২ কাপ, সুজি ২ টেবিল চামচ (ঐচ্ছিক, নরম করার জন্য), চিনি বা গুড় ৩-৪ টেবিল চামচ (স্বাদমতো), নুন ১ চিমটি, দুধ বা জল প্রয়োজনমতো (ঘনত্ব তৈরির জন্য), তেল বা ঘি সামান্য (সেঁকার জন্য)।
ব্যাটার তৈরির পদ্ধতি:
একটি বড় পাত্রে চালের গুঁড়ো, ময়দা, সুজি, চিনি/গুড় এবং নুন একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এবার ধীরে ধীরে দুধ বা জল যোগ করুন এবং ভালোভাবে মেশাতে থাকুন, যাতে কোনও দানা বা ডেলা না থাকে। ব্যাটারটি খুব বেশি ঘন বা একদম পাতলা হবে না। ঠিক ধোসার ব্যাটারের মতো মসৃণ এবং পাতলা হওয়া দরকার। ব্যাটারটি তৈরি করার পর কমপক্ষে ২০-৩০ মিনিটের জন্য ঢেকে রাখুন। এতে সুজি ও চালের গুঁড়ো নরম হবে এবং পিঠে নরম হবে।
পাটিসাপটা তৈরি:
একটি নন-স্টিক তাওয়া বা কড়াই গরম করুন এবং তাতে সামান্য তেল বা ঘি ব্রাশ করে নিন। মাঝারি আঁচে একটি হাতা দিয়ে ব্যাটার নিয়ে তাওয়ার মাঝখানে ঢেলে দিন এবং হাতাটি ঘুরিয়ে ব্যাটারটি গোল ও পাতলা আকারে ছড়িয়ে দিন। মিনিটখানেক পর যখন পিঠের উপরের অংশটি শুকিয়ে আসবে, তখন তৈরি করে রাখা নারকেলের পুর লম্বা করে একপাশে দিয়ে দিন। এবার আলতো হাতে পিঠেটিকে সাবধানে ভাঁজ করে রোলের মতো তৈরি করে নিন। পিঠের সব দিক হালকা বাদামি হওয়া পর্যন্ত সেঁকে নিন। তা হলেই তৈরি টেস্টি পাটিসাপটা।