বানিয়ে ফেলতে পারেন মুচমুচে লাউ শাকের বড়া
শীতের ঠান্ডা হাওয়া পড়তেই বাঙালির হেঁশেলে শুরু হয়ে যায় মুখরোচক জলখাবারের আনাগোনা। ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে মুচমুচে কিছু না হলে যেন জমে না আড্ডা। আর নাগেটস, ব্রেড খেয়ে একঘেয়ে লেগে গেলে পুরোনো দিনের স্বাদ ফিরিয়ে আনুন, সন্ধ্যায় বানিয়ে ফেলুন লাউ শাকের বড়া।
স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু এই ঐতিহ্যবাহী পদটি আজও বাঙালির রসনায় অমলিন। টাটকা লাউ পাতা, বেসন, চালের গুঁড়ো, পেঁয়াজ, কাঁচা লঙ্কা আর অল্প মশলা— এই সাধারণ উপকরণেই তৈরি হয় অসাধারণ স্বাদের বড়া। ডুবো তেলে ভাজা এই পদে থাকে মুচমুচে টেক্সচার আর লাউ শাকের হালকা মিষ্টি স্বাদ, যা ভাত-ডাল হোক বা বিকেলের চা — সবকিছুর সঙ্গেই মানায় চমৎকারভাবে।
বাঙালির রন্ধন ঐতিহ্যের এই বড়াটি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। ঠাকুমা-দিদিমাদের হাতের লাউ শাকের বড়া এখনও অনেকের মুখে লেগে আছে। আধুনিক রান্নাঘরেও এর কদর কমেনি। এখন অনেকেই স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য কম তেলে বা এয়ার ফ্রায়ারে বড়া ভাজেন। কেউ কেউ আদা বাটা বা ধনে পাতা দিয়ে বাড়তি স্বাদ যোগ করেন। এমনকি শহরের কিছু ক্যাফে ও রেস্তোরাঁতেও এখন এই ঐতিহ্যবাহী পদ দেখা যাচ্ছে মেনুতে।
লাউ শাক কেবল সুস্বাদুই নয়, পুষ্টিতেও ভরপুর। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, বি কমপ্লেক্স, ফাইবার, পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম, যা হজমশক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই শীতের এই সময়ে গরম গরম লাউ শাকের বড়া কেবল স্বাদেই নয়, স্বাস্থ্যের পক্ষেও উপকারী।
শুধু বাংলাতেই নয়, ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও এই খাবারের নানা সংস্করণ দেখা যায়। বিহার, ওড়িশা, অসম, সর্বত্রই শাক দিয়ে ভাজা বা বড়া তৈরির চল আছে। তাই এই শীতে যদি মন চায় কিছু মুচমুচে মুখরোচক, তাহলে একবার চেষ্টা করেই দেখুন লাউ শাকের বড়া। এক কামড়েই ফিরে আসবে শৈশবের স্মৃতি, আর মন ভরে যাবে পুরোনো দিনের সেই উষ্ণতায়।