You will be redirected to an external website

বারাণসীতে ২০০ বছর পর বিরল বেদপাঠ! দণ্ডক্রম পরায়ণম মুখস্থ বলে নজির ১৯ বছরের দেবব্রতর

A rare event! Devavrat Mahesh Rahi completed Dandakrama Parayanam at the age of just 19 in Varanasi.

বারাণসীতে ২০০ বছর পর বিরল বেদপাঠ!

বিরলতম ঘটনা! বারাণসীতে মাত্র ১৯ বছর বয়সে দণ্ডক্রম পরায়ণম (Dandakrama Parayanam) সম্পন্ন করলেন দেবব্রত মহেশ রেখে। শুক্ল যজুর্বেদের (Shukla Yajurveda) অন্যতম দুর্লভ ও জটিল এই পাঠ প্রায় ২০০ বছর পর প্রথম বার শাস্ত্রসম্মতভাবে পাঠ করা হল।

এই অসামান্য সাফল্যের পেছনে রয়েছেন তাঁর গুরু ও বাবা বেদব্রহ্মশ্রী মহেশ চন্দ্রকান্ত রেখে (Vedabrahmasri Mahesh Chandrakant Rekhe)। শুক্ল যজুর্বেদের মধ্যন্দিন শাখার (Madhyandina Branch) প্রধান পরীক্ষক হিসেবে এই ব্যক্তি পর বছর ধরে বিলুপ্তপ্রায় বেদপাঠের ধারা টিকিয়ে রেখেছেন। তাঁর কঠোর প্রশিক্ষণ ও শৃঙ্খলাই দেবব্রতকে এই ঐতিহাসিক পাঠ সম্পন্ন করতে সাহায্য করেছে, বলছে পণ্ডিতমহল।

কে এই মহেশ চন্দ্রকান্ত রেখে?

মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা মহেশ রেখে দীর্ঘদিন ধরে শুক্ল যজুর্বেদ পাঠের নির্দিষ্ট স্বর (Svara), উচ্চারণ এবং ধ্বনিমাধুর্য রক্ষার কাজ করছেন। তিনি শ্রীরঙ্গেরী পীঠের (Sringeri Peetham) বেদ পোষক সভার (Veda Poshaka Sabha) প্রধান পরীক্ষক। পুত্র দেবব্রতকে নিখুঁত মুখস্থশাস্ত্রের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুত করে তুলেছেন। আর তারপর আসে এই সাফল্য।

এনিয়ে এদিন দুপুরে টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিস্ময় কিশোরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখেন, '১৯ বছরের বেদান্তবিদ বেদমূর্তি দেবব্রত মহেশ রেখে যে সাধনা সম্পন্ন করেছেন, তা আগামী প্রজন্মও মেন রাখবে। শুদ্ধ উচ্চারণ, কোনও বিরতি ছাড়াই, পরপর ৫০ দিন ধরে শ্বেত যজুর্বেদের মধ্যন্দিনী শাখার প্রায় ২ হাজার মন্ত্রের দণ্ডক্রম পরায়ণম করেছেন তিনি। ভারতীয় সংস্কৃতি অনুরাগীদের কাছে এই কৃতিত্ব গর্বের। গুরু-পরম্পরার ঐতিহ্যকেই যেন আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন তিনি।'

কাশীর সাংসদ হিসেবে এই ঘটনার সাক্ষী হতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন মোদী। তাঁর বক্তব্য, পবিত্র এই স্থানে এমন এক বিরল, দুষ্প্রাপ্য এবং কঠোর বেদপাঠ-পর্ব সম্পন্ন হওয়া ঐতিহাসিক মুহূর্ত। তিনি দেবব্রত রেখে, তাঁর পরিবার, এবং দেশজোড়া বহু সন্ন্যাসী, পণ্ডিত, আচার্য ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান, যাঁদের আশীর্বাদ ও সহায়তায় এই সাধনা সম্ভব হয়েছে।

দেবব্রতের এই পরায়ণম শুধু সময়সাপেক্ষ ছিল এমন নয়, এর প্রতিটি মন্ত্র নিখুঁত স্বর, ছন্দ ও স্মৃতিশক্তির প্রতিমূর্তি। নিরবচ্ছিন্ন ৫০ দিনের কঠোর সাধনা শেষে দেশজুড়ে আধ্যাত্মিক মহলে বিশেষ সাড়া পড়েছে। ভারতীয় বৈদিক ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা রক্ষার ক্ষেত্রে এই কৃতিত্বকে অনন্য বলে অভিহিত করা হয়েছে।

দণ্ডক্রম পরায়ণম কী?

দণ্ডক্রম পরায়ণমকে বেদের পাঠকলার ‘মুকুটমণি’ বলা হয়। কারণ তার জটিলতা, নিয়ম এবং শাস্ত্রসম্মত কাঠামো (Structured Recitation) অন্য সকল পাঠপদ্ধতির তুলনায় কঠিনতর।

এই পাঠের বিশেষত্ব—

  • শুক্ল যজুর্বেদের প্রায় ২,০০০ মন্ত্র ধারাবাহিক ভাবে বিশেষ ক্রমে পাঠ
  • কড়াকড়ি স্বরনিয়ম (Intonation Rules) মানা
  • নিখুঁত ধ্বনিবিন্যাস (Phonetic Precision)
  • কোনও লেখা না দেখে সম্পূর্ণ মুখস্থ পাঠ

ইতিহাসে মাত্র দু’তিন বার শাস্ত্রসম্মতভাবে হওয়ার নথি পাওয়া যায়

  • জটিলতার কারণে পাঠপদ্ধতিটি প্রায় হারিয়ে গিয়েছিল। 
  • তাই দেবব্রতের পাঠকে পণ্ডিতেরা প্রায় ২০০ বছরের মধ্যে প্রথম ‘ক্লাসিক্যালি পিওর’ (Classically Pure) দণ্ডক্রম পরায়ণম বলছেন।

৫০ দিনে কী ভাবে সম্পন্ন করলেন দেবব্রত?

২০২৫ সালের ২ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বারাণসীর বল্লভরাম শালিগ্রাম সংগ্বেদ বিদ্যালয়ে (Vallabharam Shaligram Sangved Vidyalaya) চলে এই বিরল পাঠ।

উল্লেখযোগ্য দিক-

  • টানা ৫০ দিন একটানা পাঠ
  • প্রতিটি মন্ত্রের নিখুঁত উচ্চারণ
  • কোনও বই না দেখে মুখস্থ পাঠ
  • সময়ের দিক থেকে সবচেয়ে দ্রুত ও শুদ্ধ পাঠ।

শ্রীরঙ্গেরী জগদগুরু শঙ্করাচার্যর (Sringeri Jagadguru Shankaracharya) আশীর্বাদে পাঠ শুরু হয়। পাঠশেষে বারাণসীর সাধু-সন্ন্যাসী, বেদজ্ঞ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দেবব্রতকে সংবর্ধনা জানায়।

অভিনব কীর্তির সম্মানস্বরূপ তাঁকে ৫ লক্ষ টাকার সোনার বালা এবং নগদ ১,১১,১১৬ টাকা প্রদান করা হয়। বারাণসীর রথযাত্রা ক্রসিং থেকে মহমূর্গঞ্জ পর্যন্ত চলে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। ৫০০-র বেশি বেদছাত্র, বাদ্যকার, নাগাড়াবাদক এবং শঙ্খধ্বনি, সব মিলিয়ে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে গোটা শহর।

দেবব্রতকে বিশেষ আশীর্বাদ পাঠান শ্রীরঙ্গেরী জগদগুরু শ্রীশ্রী ভারতী তীর্থ মহাসন্নিধানম (Bharati Tirtha Mahasannidhanam)। অনুষ্ঠানটিকে কেন্দ্র করে বারাণসী যেন পুনর্জাগরিত করল এমন এক বেদসংস্কৃতিকে, যা অনেকের মতে ইতিমধ্যেই বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।

AUTHOR :Rima Ghatak

Rima Banerjee is a content writer at Express News, with over 3 years of experience in digital journalism. She holds a Bachelor's degree in Mass Communication from Kazi Nazrul University. Passionate about news and storytelling, Rima is dedicated to delivering accurate, engaging, and timely content that connects with readers across platforms.

মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচল! মান্ডিতে হাড়পা বানে তলিয়ে গেল বাড়ি, নিখোঁজ বহু, সরকারের হিসেব অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ২৩ জন Read Previous

মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্য...

It's going up and up, there's no stopping it. Since the beginning of November, as the winter mood has been increasing, the price of eggs has also been gradually increasing. Read Next

ডিমে হাত দিলেই ছ্যাঁকা, ল...