তোদের পিঁপড়ের মতো মারব: জঙ্গলমহলে মুখ্যমন্ত্রী
কথার তোড়ে ফের ঝড় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Chief Minister Mamata Banerjee)। জঙ্গলমহলের মঞ্চ থেকে নাম না করে কেন্দ্রীয় সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে একহাত নিলেন তিনি। হুঁশিয়ারি দিলেন আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে— ‘‘সিপিএমের (CPIM) গুলি খেয়ে বেঁচে গিয়েছি, তোদের পিঁপড়ের মতো মেরে ফেলব।’’
বুধবার ঝাড়গ্রামের সভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এক সময় এই জঙ্গলমহল বারুদের গন্ধে ঢেকে থাকত। গুলির আওয়াজে কেঁপে উঠত গাছপালা। আমি সে সব দিন দেখেছি। আমি দেখেছি কীভাবে সিপিএমের বন্দুক আমার দিকে তাক করেছিল। মাথা থেকে পা পর্যন্ত ফাটিয়ে দিয়েছিল ওরা।’’
এরপরই হাত তুলে পিঁপড়ে চেপে মারার অঙ্গভঙ্গি করে বলেন, ‘‘সেই গুলি খেয়ে যদি বেঁচে যেতে পারি, তোদের তো পিঁপড়ের মতো মেরে দেব!’’ বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা এদিন এও বলেন, "আমি চাইলে তবেই হারাতে পারবেন, না হলে নয়।"
এদিনের বক্তব্যে ‘মালপোয়া’ নামেও কেন্দ্রের এক মন্ত্রীকে কটাক্ষ ছুড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘মালপোয়ারা বলছে, আমাকে ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে অ্যারেস্ট করা উচিত, কারণ আমি বাংলায় কথা বলেছি! বুকের পাটা থাকলে বল তো, কবে গুলি করবি? কবে গ্রেফতার করবি? আয় দেখি!’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, মমতার এই আক্রমণ যে শুধুই রাজনৈতিক বার্তা নয়, বরং, ২০২৬-র বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির শুরুতেই জঙ্গলমহলকে ‘পাল্টা প্রতিরোধ’-এর বার্তা দিতে চাইলেন দলনেত্রী। তাই পুরনো দিনের ‘ফাইটার মমতা’ রূপেই উঠে এলেন আবার।
মনে করালেন, আগে ঝাড়গ্রামে লোক আসতে ভয় পেতেন, পালা বদলের পর থেকে তাঁর নেতৃত্বেই ধীরে ধীরে জঙ্গলমহলে ফিরেছে শান্তি।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্য সামনে আসতেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিরোধীরা। বিরোধীদের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর এই ভাষা এক জন গণতান্ত্রিক দেশের মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে শোভা পায় না। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কটাক্ষ, ‘‘পিঁপড়ে মারার হুমকি দিয়ে আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন, উনি কতটা দিশেহারা হয়ে গিয়েছেন।’’