শ্রীভূমি থেকে কী বার্তা দিলেন?
দেবীপক্ষের আগে পুজোর উদ্বোধন নয়, অর্থাৎ মাতৃমূর্তি উন্মোচন নয়। কিন্তু মণ্ডপের দ্বারোদ্ঘাটন তো হতেই পারে। তাতে দর্শনার্থীরা অন্তত বাইরে থেকে মণ্ডপসজ্জা দেখতে পাবেন। তাই মহালয়ার আগের দিন, শনিবার কলকাতার বেশ কয়েকটি নামী পুজোমণ্ডপের দ্বার খুলে গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। হাতিবাগান সর্বজনীন, টালা প্রত্যয় ও শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের মণ্ডপে গেলেন তিনি। লেকটাউনে শ্রীভূমির পুজোর অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তায় শোনা গেল বাঙালি অস্মিতার কথা। শোনা গেল জাতীয় ঐক্যের কথা। বাঙালির সেরা উৎসবে যেন কোথাও বাঙালির মর্যাদা, আবেগে ভাটা না পড়ে, সেকথাই ফের মনে করিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
শনিবার বিকেলে উত্তর কলকাতার দুটি পুজোমণ্ডপ ঘুরে মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছে যান লেকটাউনের শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে। দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর পুজো হিসেবে পরিচিত শ্রীভূমি কলকাতার বিখ্যাত ও আকর্ষণীয় পুজোগুলির মধ্যে একটি। প্রতি বছর তার উদ্বোধন করে থাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুজো শুরুর আগে থেকেই মণ্ডপ দেখতে উপচে পড়ে ভিড়। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তবে এবছর মহালয়ার আগের দিনই শ্রীভূমির মণ্ডপের দ্বারোদ্ঘাটন করতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাংলা ভাষার অসম্মান, পরিযায়ী শ্রমিকদের উপরে নির্যাতন নিয়ে সরব হলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”বৈচিত্রের মধ্যে একতাই হলো মূল কথা। না হলে দেশ টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। সকলেই নিজের মাতৃভাষাকে সম্মান করেন। কিন্তু বাইরের রাজ্যে বাংলা ভাষায় কথা বললে অত্যাচার হচ্ছে। এটা মানা যায় না। বাংলা থেকে ২২ লাখ পরিযায়ী শ্রমিক ভিনরাজ্যে কাজে যান। তাঁদের ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। কেননা তাঁদের সেই দক্ষতা, মেধা রয়েছে। এই রাজ্যেও বাইরে থেকে দেড় কোটি মানুষ কাজ করছেন। তাঁদের প্রত্যেকের নিজস্বতা রয়েছে। সকলের মত পথ আলাদা। কিন্তু সকলে যখন সমবেত হন, তখন একটাই পথ তৈরি হয় – সেটা ঐক্যের। যেদিন ঐক্য থাকবে না, সেদিন দেশ টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। তাই সকলকে মিলেমিশে থাকতে হবে।”