কেন্দ্রীয় পথ খুলতে উদ্যোগী বিস্তা, মমতাকে ‘অনুরোধ’ চিঠি দার্জিলিঙের সাংসদের |
চলতি মরসুমে এই নিয়ে ছ'বার প্লাবনের মুখে ঘাটাল! চাষের জমি, রাস্তা, বাজার সবই জলের তলায়
চলতি মরসুমে এই নিয়ে ছ'বার প্লাবনের মুখে ঘাটাল
আবারও দুঃস্বপ্নের ঘাটাল (Ghatal)! চলতি মরসুমে ছ'বার প্লাবনের মুখে পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Midnapore) ঘাটাল। টানা বৃষ্টিতে ফুলে উঠেছে শিলাবতী নদী (Shilabati Nadi)। নদীর জল কূল ছাপিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়তেই ফের ভাসছে শহর থেকে গ্রাম। রবিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া জলবর্ধনের ফলে ঘাটালের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলের তলায়। চাষের জমি, রাস্তা, বাজার সবই এখন প্লাবিত।
স্থানীয় প্রশাসন জানাচ্ছে, ঘাটালের মানিককুণ্ডু, সুলতানপুর, বাঁকা, আজবনগর ও মহারাজপুর-সহ একাধিক এলাকা জলমগ্ন। ঘাটাল পুরসভার নিশ্চিন্তা, গড়প্রতাপনগর প্রভৃতি নিচু অঞ্চলেও জল ঢুকে পড়েছে। শিলাবতীর জলস্তর দ্রুত বাড়ছে। ফলে গ্রামীণ রাস্তাগুলি কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। হাঁটুসমান জল পেরিয়ে এখনও যাতায়াত চলছে, কিন্তু সেই পথও দ্রুত অচল হয়ে উঠছে।
চন্দ্রকোনাতেও ছবিটা একই। নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি আর জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে এলাকা পরিণত হয়েছে ছোটখাটো হ্রদে। সুলতানপুরের বাসিন্দাদের কথায়, সোমবার লক্ষ্মীপুজো। কিন্তু পুজোর বাজার করতে যেতে হচ্ছে বন্যার জলে হেঁটে। জল আরও বাড়লে এভাবেও বেরনো যাবে না। কেউ বলছেন, শনিবার বিকেল থেকেই জল উঠতে শুরু করেছে মাঠে। শিলাবতীর জলে কেঠিয়া খাল উপচে পড়েছে। এখন রাস্তায় হাঁটুসমান জল, সাইকেলেও যাওয়া যায় না। ধান আর সব্জি দুটোই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
প্রশাসনের তরফে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, “নদীর জলস্তর ক্রমশ বাড়ছে। শনিবার থেকেই মাইকিং করে মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে। পুরসভার নিচু অঞ্চলে জল ঢুকতে শুরু করেছে। আপাতত ত্রাণশিবির খোলা হয়নি, তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কন্ট্রোল রুম চালু আছে এবং নিয়মিত নজরদারি চলছে।”
এদিকে, ডিভিসি-র জল যদি রূপনারায়ণে মেশে, তবে বিপর্যয় আরও গভীর হতে পারে বলে আশঙ্কা। স্থানীয় বাসিন্দারা এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন— কখন যে ঘর পর্যন্ত পৌঁছে যায় সেই জল!
এদিকে রাতভর বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দার্জিলিং। মিরিক, সুখিয়াপোখরির অবস্থাও বেহাল। উত্তরবঙ্গের প্রায় সব নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। এই আবহে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ডুয়ার্স-সহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির বিভিন্ন এলাকাতেও। শিলিগুড়ির পোড়াঝাড়ে মহানন্দা নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত আস্ত গ্রাম। ফুলেফেঁপে উঠেছে তোর্সা নদী। তার জল ঢুকে জলমগ্ন গোটা কোচবিহার শহর। কোথাও হাঁটুজল জমেছে। কোথাও আবার কোমরজল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, ‘‘বৃষ্টিতে ভূটানের জলে ভরে গিয়েছে উত্তরবঙ্গ। এই বিপর্যয় দুর্ভাগ্যজনক। দুর্যোগ তো আমাদের কারও হাতে নেই। আমরা মর্মাহত।’’ তিনি আগে থেকেই জানিয়েছিলেন, এমন পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ঘাটাল। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল।