মতুয়া বিতর্কে মহুয়াকে খোঁচা শুভেন্দুর
তাঁদের উদ্দেশে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে মহুয়া মৈত্রের (Mahua Moitra) বিরুদ্ধে সরব হয়েছে মতুয়াদের (Matua) একাংশ। থানায় অভিযোগ তো দায়ের হয়েছেই, তৃণমূল সাংসদ (TMC MP) মমতাবালা ঠাকুরের অনুগামীরাও শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু এতকিছুর পরও ক্ষমা চাননি কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। কেন, সেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
কৃষ্ণনগরের (Krishnanagar) একটি সভা থেকে মহুয়াকে বলতে শোনা যায়, “সারা বছর তৃণমূল, আর ভোটের সময় সনাতনী! এটা কী অঙ্ক ভাই?” এখানেই না থেমে তিনি বলেন, “কাঠের মালা পরে সব তো চলে আসেন ভাই ভাতা নিতে! তখন কী হয়?” অভিযোগের সুরে বলেছিলেন, লক্ষ্মীর ভান্ডারে অন্যদের তুলনায় তফসিলি জাতি, জনজাতির মহিলারা বেশি টাকা পান। তাও মতুয়া প্রধান বিভিন্ন বুথে তৃণমূলকে ভোট দেওয়া হয় না।
এই মন্তব্য ছড়িয়ে পড়তেই, মতুয়া সমাজে প্রবল ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঠাকুরবাড়ির বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর তীব্র নিন্দা করেন মহুয়ার। এই মন্তব্যের পরই শুরু হয় বিতর্ক। আর শুক্রবার সেই বিতর্কের আগুনে আরও ঘি ঢাললেন শুভেন্দু।
জনসভা থেকে তিনি বলেন, মহুয়া মৈত্র ক্ষমা চাননি কারণ তাঁর মাথায় সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত রয়েছে। শুভেন্দুর কথায়, ''মহুয়া ক্ষমা চাননি কেন, কারণ তিনি মমতার ছোট বোন। তিনি জানেন, ক্ষমা চাইলে ৩৫ শতাংশ রেগে যাবে। তাই সনাতনীদের যতখুশি আক্রমণ করা যায়।''
যদিও নিজের মন্তব্যের প্রতি অনড় রয়েছে তৃণমূল সাংসদ। তাঁর সাফ কথা, তিনি কিছু ভুল বলেননি, বরং তাঁর মন্তব্যের অপব্যাখ্যা করছে বিজেপি। মহুয়া এও মনে করান, বনগাঁ, কৃষ্ণনগর টাউন কোনওটাই তৃণমূল জেতেনি, তবে সেখানে উন্নয়নের কাজ থেমে নেই।
তৃণমূলের অন্দরে অবশ্য মহুয়ার মন্তব্য নিয়ে বরাবরই অস্বস্তি ছিল। আগেও তাঁর মা কালী বিষয়ক মন্তব্যে দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন। তখন দল কৌশলে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছিল।
গত বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) লেখা এক খোলা চিঠিতে (Letter to Chief Miniter) ‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ’-এর সাধারণ সম্পাদক সুকেশচন্দ্র চৌধুরী অভিযোগ করেন, মহুয়ার মন্তব্য মতুয়া ও নমঃশূদ্র সমাজের ধর্মীয় অনুভূতি ও আত্মসম্মানে আঘাত করেছে। চিঠিতে দাবি, ‘‘আচারমালা’’ নিয়ে কটাক্ষ করে মহুয়া ‘কাঠের মালা’ বলে যা বলেছেন, তা ঘোরতর অবমাননাকর।