নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন কেপি শর্মা ওলি!
প্রত্যাশামতোই মঙ্গলবারেই ইস্তফা দিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। জেন জির দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার বিরোধী আন্দোলনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন ওলি। সোমবার থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের বিরুদ্ধে নবীন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা প্রবল বিক্ষোভ শুরু করে। সেই আন্দোলন দমন করতে সরকার ব্যাপক দমনপীড়ন চালালে প্রায় ২০ জনের মৃত্যু ও কয়েক শতাধিক জখম হন। তারই বিরুদ্ধে শাসক জোট সরকারের ভিতরে বাইরে প্রবল সমালোচিত হন। একের পর এক তাঁর মন্ত্রীরা পদত্যাগ করতে শুরু করেন। বিরোধী দলও তাঁর পদত্যাগ দাবি করে। শেষমেশ সেনাবাহিনী প্রধানমন্ত্রীকে ইস্তফা দিতে বলার পর পদত্যাগ করলেন ওলি।
এদিনই সকালে নেপালে ‘জেন জি’ (Gen G) প্রজন্মের প্রবল সরকার-বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল অবস্থায় পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যালোচনায় সর্বদল বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় ওই বৈঠক হবে বলে স্থির হয়েছিল। আর তাতেই বিভিন্ন মহলে তাঁর সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়েছিল। তিনিও শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের মতো দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন বলে সংবাদ মহলে খবর ছড়িয়েছে।
যদিও ভারতের সঙ্গে ওলির সম্পর্ক খারাপ থাকায় তিনি এদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পাবেন না। নেপালের কাছের বন্ধু চিনও তাঁকে নিতে নারাজ। ইস্তফা দিয়ে নিরাপদ পলায়ন চেয়েছেন ওলি। সেইমতো সেনাবাহিনী তাঁকে দুবাই ছেড়ে দিয়ে আসতে পারে। সেনাবাহিনী ওলিকে পালাতে সাহায্য করতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। যদিও বিদ্রোহীরা ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একাংশে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে এবং গোটা চত্বর ঘিরে রেখেছে। যাতে কোনও মন্ত্রী বা পদাধিকারী পালাতে না পারেন। এদিনই সেনা সদরে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডাকা হয়েছিল। বিদ্রোহীরা সংসদ ভবনের দখল নিয়েছে এবং নেপালি কংগ্রেস, সিপিএন-ইউএমএলের সদর কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
এদিকে, নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, উপপ্রধানমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর পদত্যাগের পর ইস্তফা দেন জল সরবরাহ মন্ত্রী প্রদীপ যাদব। তিনি জনতা সমাজবাদী পার্টির এমপি ছিলেন। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ওলির কাছে গিয়ে তিনি জেন জি বিদ্রোহ দমনে সরকারের ভূমিকার প্রতিবাদে ইস্তফা দেন তিনি।
অন্যদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নেপালি কংগ্রেসের ভিতরেও সরকারে থাকা-না থাকা নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। দলে বংশানুক্রমিক প্রভাবসম্পন্ন মুম্বইয়ের অভিনেত্রী মণীষা কৈরালার খুড়তুতো দাদু ডাঃ শেখর কৈরালা তাঁর অনুগামী মন্ত্রীদের ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে দিয়েছেন। যেহেতু দলের সভাপতি শেরবাহাদুর দেউবা সরে যেতে নারাজ, তাই শেখর কৈরালা তাঁর ঘনিষ্ঠ মন্ত্রীদের ইস্তফা দিতে বলেছেন।