মোদীর মুখে কলকাতার ওলিগলির ঐতিহ্য
বছর ঘুরলেই বাংলায় মহা-ইভেন্ট। তার আগে ‘বাঙালি অস্মিতা’- এই শব্দ বন্ধ এখন বঙ্গ রাজনীতির জ্বলন্ত ইস্যু। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শাসক-বিরোধী-প্রত্যেক দলের নেতৃত্বের মুখে ঘুরেফিরে আসছে বাঙালি অস্মিতা রক্ষার কথা! বাঙালি অস্মিতা রক্ষার্থে আদতে কে ব্যর্থ, তা নিয়ে যুযুধান প্রতিপক্ষ একে অপরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে, উত্তাল হচ্ছে সংসদ! শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখে আরও একবার উঠে এল সেই প্রসঙ্গ। দমদমের বক্তৃতায় বাংলায় উন্নয়ন, আর সেক্ষেত্রে বিজেপি সরকার আনা ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটাই জুড়ে ছিল মোদীর ভাষণে। আর সবটা জুড়ে ছিল বাংলা ও বাঙালি। সে বাংলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মন্দিরের নামই হোক, কিংবা মণীষীদের নাম! আর সর্বোপরি বাংলায় গান! মোদীর মুখে সবটা জুড়ে ছিল বাংলা।
যেখানে বঙ্গ রাজনীতিক একটা অন্যতম ইস্যু হয়ে উঠেছে বাঙালি অস্মিতা। আর এই ইস্যুকে হাতিয়ার করেই পথে নেমেছে রাজ্যের দল, সংসদে তুলেছে ঝড়। অভিযোগ একটাই, বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের হেনস্থা! আর সেক্ষেত্রে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারকে নানাভাবে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে রাজ্য সরকার। এদিকে আবার, মোদী বাংলায় এসে বলছেন, বাংলাকে ধ্রুপদি ভাষার মর্যাদা দিয়েছে কেন্দ্র, বাংলায় বিজেপি সরকার এলে শ্যামাপ্রসাদের বাংলা ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কথায়, নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে বাঙালিদের ‘মন পেতে’ মরিয়া রাজ্যের যুযুধান প্রতিপক্ষ।
দমদমের সভামঞ্চে বক্তৃতা রাখার শুরুতেই মোদীর মুখে উঠে এল, দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দির, কালীঘাট মন্দিরের কথায়। কেবল তাই-ই কলকাতা ওলিগলিতে থাকা মন্দির, যেমন করুণাময়ী কালী মন্দির, দমদম বালাজি হনুমান সবার কথা উল্লেখ করলেন, সঙ্গে আবার ঠিকানা-রাস্তার নম্বর ধরেও। কৌশিকী অমাবস্যার বিকালে মোদী বললেন, “দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দির ও কালীঘাট মন্দির, শ্রীশ্রী ১০৮ করুণাময়ী কালীমাতা মন্দির, দমদম বালাজি হনুমান, রামকৃষ্ণ সেবা মন্দির-এই সবস্থানে দেবী দেবতাদের আমার প্রণাম।”
এর আগেও নির্বাচনের আগে বাংলার দুর্গাপুজোও একটি ‘রাজনৈতিক’ ইস্যু হয়ে উঠেছিল। আবারও মোদীর মুখে সেই কলকাতার দুর্গাপুজোর কথা। বললেন, “এমন সময়ে আমি কলকাতায় এসেছি, যখন দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি হচ্ছে, কুমোরটুলিতে মা দুর্গার প্রতি মা তৈরি হচ্ছে। বড়বাজার থেকে পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত কলকাতা নতুন রঙে সাজছে। বিকাশের পর্বও যুক্ত হলে খুশি দ্বিগুণ হয়ে যায়।”
কেবল মন্দির, মণীষী, দুর্গাপুজোই নয়, বাংলায় কথাও বললেন, নবজাগরণের কথা, নববিকাশের কথা! শ্যামাপ্রসাদের বাংলা ফিরিয়ে আনার কথা দিয়ে গেলেন, তবে তার জন্য আবেদনও করলেন, বাংলার মানুষ যাতে ছাব্বিশের নির্বাচনে বিজেপিকেই আনে।