‘বাংলাদেশি বলে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে’, গুরুগ্রামের পরিযায়ী শ্রমিকের বার্তায় আতঙ্ক আলিপুরদুয়ারে |
‘বাংলাদেশি বলে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে’, গুরুগ্রামের পরিযায়ী শ্রমিকের বার্তায় আতঙ্ক আলিপুরদুয়ারে
ছবি ইন্টারনেট
এবার হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে বাংলার এক পরিযায়ী শ্রমিকের ভিডিও বার্তা ঘিরে জেলার রাজনীতিতে শাসক-বিরোধী তরজা শুরু হয়ে গেল। সম্প্রতি ফালাকাটা ব্লকের জটেশ্বরের হেদায়েত নগর এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা অনিল বর্মন গুরুগ্রাম থেকে একটি ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন। ওই বার্তায় পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে নথি চেয়ে আবেদন জানান অনিল। আর তাতেই রাজনৈতিক মহলে শোরগোল শুরু হয়ে গেছে। গুরুগ্রাম থেকে অনিল বর্মন বলেন, “এখানে বাংলা বললেই বাংলাদেশি বলে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সেই কারণে আমরা খুব বেশি বাড়ি থেকে বের হচ্ছি না। বাইরে বাংলাও বলছি না। ভয় পাচ্ছি। আমাকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হিসাবে ভেরিফাইড সার্টিফিকেট করে দিলে ভালো হয়।”
এই ভিডিও বার্তাকে হাতিয়ার করে আসরে নেমেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল ফেসবুকে সেই বার্তা শেয়ারও করেছেন। ফালাকাটা গ্রামীণ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সঞ্জয় দাসের নেতৃত্বে তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল শনিবার পরিযায়ী শ্রমিক অনিল বর্মনের বাড়িতে গিয়ে তাঁর মা ও দিদির সঙ্গে দেখা করে অভয় দিয়ে এসেছেন। ফালাকাটা গ্রামীণ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সঞ্জয় দাস বলেন, “বাংলা বললেই বাংলাদেশি বলে ধরে নিয়ে মারধর করা হচ্ছে। এটা শুনে ওই শ্রমিক আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি। প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমরা এই পরিবারের পাশে আছি।”
অনিল বর্মনের দিদি কবিতা বর্মন বলেন, “ভাই ফোন করে বারবার কাগজের কথা বলছে। আমরা কীভাবে কোন কাগজ দেব বুঝতে পারছি না। ওরা ভয়ে আছে, আতঙ্কে আছে। প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।” বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের কর্তারা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে স্বীকার করেছেন অনিল বর্মন। বিষয়টি নিয়ে জেলার যুগ্ম শ্রম কমিশনার গোপাল বিশ্বাস বলেন, “আমরা ওই শ্রমিককে একটি পরিযায়ী শ্রমিকের কার্ড বানিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। তার জন্য ফর্মও ইস্যু হয়েছে। ওঁর দিদিকে বলা হয়েছে সোমবার অফিসে এসে ফর্মে একটা সই করে দেওয়ার জন্য। দিদি না আসতে পারলে ব্লক থেকে আমাদের কর্মীরা ওঁর বাড়িতে গিয়ে সেই সই করিয়ে নিয়ে আসবেন। আতঙ্কের কোনও কারণ নেই।” বিষয়টি নিয়ে জেলা বিজেপির সভাপতি মিঠু দাস বলেন, “এই ঘটনার পিছনে তৃণমূল দলের একটা চক্রান্ত রয়েছে।”
জানা গিয়েছে, প্রায় ৩০ বছর ধরে জটেশ্বরের অনিল বর্মন গুরুগ্রামে গাড়ির সরঞ্জাম তৈরির কারখানার মেশিন সারাইয়ের কাজ করেন। স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি সেখানে থাকেন। এখন বাংলা বলায় ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে বিপাকে পড়েছেন অনিল বর্মন।