দুর্গাপুরে ডাক্তারি পড়ুয়াকে গণধর্ষণ
দুর্গাপুরে দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়াকে গণধর্ষণের (Odisha Crime Case) ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য। নির্যাতিতা ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা। ঘটনার পর থেকে ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয় মানুষ। এমনকি ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝিও (Odisha CM Mohan Charan Majhi) সরাসরি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছে দোষীদের কঠোর শাস্তির আবেদন জানিয়েছেন।
এই নৃশংস ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, 'দুর্গাপুরে ওড়িশার এক কন্যার ওপর নির্মম অত্যাচারের খবর শুনে ব্যথিত ও উদ্বিগ্ন। দোষীদের দ্রুত কঠোরতম শাস্তি দেওয়ার জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।'
তিনি আরও জানিয়েছেন, 'ওড়িশা সরকারের উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক ও পুলিশ কর্তাদের বাংলার প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে নিরপেক্ষ তদন্ত ও ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করা যায়। একই সঙ্গে নির্যাতিতার দ্রুত শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা কামনা করে তিনি জানান, 'ওড়িশা সরকার তাঁর পাশে রয়েছে এবং প্রয়োজন হলে সবরকম সাহায্য করা হবে।'
সূত্রের খবর, শুক্রবার রাতে ওই ছাত্রী কলেজের হস্টেল থেকে এক বন্ধুর সঙ্গে খাবার খেতে বেরিয়েছিলেন। অভিযোগ, ফেরার পথে তাঁকে জোর করে একটি নির্জন জঙ্গলে টেনে নিয়ে যায় কয়েকজন দুষ্কৃতী। সেখানে তাঁকে ধর্ষণ করা হয় (Durgapur Medical Student Assault)। নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, অভিযুক্তরা তাঁর মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় এবং ৩ হাজার টাকা চায়। মেয়েটি টাকা দিতে না পারায় তাঁকে মারধরও করা হয়। কিছু সময় পর রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁর বন্ধু তাঁকে উদ্ধার করে।
নির্যাতিতার বাবার অভিযোগ, 'রাত দশটার পর ফোন পেয়ে কলেজে পৌঁছাই। মেয়েকে ভয়ংকর অবস্থায় পাই। ওর শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছিল।' ঘটনার রাতে যেই বন্ধুর সঙ্গে তরুণী বেরিয়েছিলেন, তাঁকে পুলিশ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে অন্তত পাঁচজন যুবক উপস্থিত ছিল। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে দুর্গাপুর থানার পুলিশ।
এই ঘটনার পর কলেজ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। স্বাস্থ্যভবন ইতিমধ্যেই কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছে। শনিবার দুপুরে কলেজ পরিদর্শনে গিয়েছেন জাতীয় মহিলা কমিশনের একটি প্রতিনিধি দলও।
পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও ঘটনাস্থলে গিয়ে কথা বলেছেন নির্যাতিতার সঙ্গে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত জানিয়েছেন, “তদন্ত চলছে। নতুন তথ্য পুলিশের কাছে এলে তা জানানো হবে।” বিষয়টির সংবেদনশীলতার কথা মাথায় রেখে তদন্ত করছে পুলিশ।