শান্তিচুক্তি কি ভেস্তেই গেল?
কৃষ্ণসাগরে রুশ তেলের ট্যাঙ্কারকে লক্ষ্য করে যে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে (Russian oil tanker attacked), তা নতুন করে রাশিয়া–ইউক্রেন সংঘর্ষকে (Russian-Ukraine War) উত্তপ্ত করে তুলেছে। দু’দিনে দু’বার বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে ‘বিরাট’ নামের ওই তেলবাহী জাহাজ (Russian oil tanker Virat)। প্রকাশ্যে আসা ভিডিওতে রাতের অন্ধকারে ভয়াবহ বিস্ফোরণের আগুনের লেলিহান শিখা স্পষ্ট দেখা গেছে। এমন অবস্থায় জাহাজের নাবিকরা তড়িঘড়ি জরুরি বার্তা পাঠিয়ে জানান, 'বিরাট থেকে বলছি, সাহায্য চাই, ড্রোন হামলা হয়েছে…' ঘোষণা করা হয়, 'মে-ডে!'
তুর্কির পরিবহণ মন্ত্রক জানিয়েছে, শুক্রবার গভীর রাতে কৃষ্ণসাগরে (Black Sea) উপকূল থেকে প্রায় ৩৫ নটিক্যাল মাইল দূরে প্রথম আঘাতে কেঁপে ওঠে জাহাজটি। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শনিবার ভোরে ফের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। প্রথমদিকে হামলার উৎস স্পষ্ট ছিল না। তুর্কি পরিবহণ মন্ত্রী আব্দুল কাদির উরালোগলু জানান, “জাহাজের বাইরের অংশে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মাইন, রকেট, ড্রোন অথবা স্বয়ংক্রিয় ডুবোযানে আঘাত লেগে থাকতে পারে।”
তবে পরে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, রুশ তেলবাহী ওই ট্যাঙ্কারকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন (Ukraine)। শান্তিচুক্তির জন্য আমেরিকার বাড়তি চাপের মধ্যেই কিয়েভ এই কৌশলগত আক্রমণ ঘটিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউ-ও এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, তাদের বিশেষ বাহিনী এবং নৌসেনা যৌথভাবে এই অভিযান চালিয়েছে।
হামলায় ঠিক কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে জাহাজে থাকা কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিস্ফোরণের সময় যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল, তা নাবিকদের পাঠানো জরুরি বার্তাতেই স্পষ্ট।
এই ঘটনার পরে কৃষ্ণসাগর অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বহু দিন ধরেই রাশিয়া ও ইউক্রেন—দু’পক্ষই সমুদ্রপথে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ হামলা চালিয়েছে। এই নতুন আঘাত পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলল।
সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এখন, এই হামলার পরে রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তিচুক্তির সম্ভাবনা আদৌ আছে কি না। আমেরিকা আলোচনার জন্য চাপ দিলেও, মস্কো এই ঘটনার পর আরও কঠোর অবস্থান নিতে পারে বলে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।