কেন্দ্রীয় পথ খুলতে উদ্যোগী বিস্তা, মমতাকে ‘অনুরোধ’ চিঠি দার্জিলিঙের সাংসদের |
ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেল 'স্পিতি ভ্যালি', দেশের প্রথম কোল্ড ডেজার্ট বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ এটিই
ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেল 'স্পিতি ভ্যালি
দেশের প্রথম 'কোল্ড ডেজার্ট বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ' (MAB) স্পিতি। ইউনেস্কোর 'ম্যান অ্যান্ড দ্য বায়োস্ফিয়ার' প্রোগ্রামে স্বীকৃতি পেল সম্প্রতি। বিশ্বব্যাপী MAB নেটওয়ার্কে ভারতের বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের সংখ্যা দাঁড়াল ১৩।
চিনের হাংঝৌ শহরে আয়োজিত ৩৭তম ম্যান অ্যান্ড দ্য বায়োস্ফিয়ার অনুষ্ঠানে এই নিয়ে আলোচনা হয়। ইউনেস্কো বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের মর্যাদা দেয় সেই সব অঞ্চলকে, যেখানে বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র্য রয়েছে। স্পিতিতে একদিকে যেমন কড়া সংরক্ষণের জন্য 'কোর জোন' থাকে, তেমনই সীমিত কর্মকাণ্ডের জন্য বাফার জোন। সঙ্গে মানুষের ভালভাবে বসবাস ও কাজের জন্য ট্রানজিশন রাখা হয়।
প্রায় ৭,৭০০ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত এই 'স্পিতি রিজার্ভে'র অন্তর্গত গোটা স্পিতি ওয়াইল্ডলাইফ ডিভিশন (Spiti Wildlife Division) এবং লাহৌলের কিছু অংশ। বরালাচা পাস, সারচু, ভরতপুরের মতো উচ্চতম অঞ্চলও এর অধীনে পড়ে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,৩০০ মিটার থেকে শুরু করে ৬,৬০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত এই অপূর্ব ভূখণ্ডে মিলেমিশে রয়েছে উঁচু পর্বতশ্রেণি আর বিশাল সমতলভূমি।
এর মধ্যে পাইন ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক, কিবর ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি, চন্দ্রতাল ওয়েটল্যান্ড এবং সার্চু প্লেইন্স বিশেষ সুরক্ষিত এলাকা হিসেবে যুক্ত হয়েছে। এই বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের ফলে বিরল উদ্ভিদ ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ হবে, পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী এলাকায় মানবজীবনেও কোনও প্রভাব পড়বে না।
ভারতের অন্যান্য যে সব বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ বিশ্বব্যাপী MAB নেটওয়ার্কে রয়েছে, সেগুলি হল— নীলগিরি (তামিলনাড়ু, কেরালা, কর্নাটক), গালফ অব মান্নার (তামিলনাড়ু), সুন্দরবন (পশ্চিমবঙ্গ), নকরেক (মেঘালয়), নন্দা দেবী (উত্তরাখণ্ড), গ্রেট নিকোবর (আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ), সিমলিপাল (ওড়িশা), দিব্রু-সইখোয়া (অসম), পচমাড়ি (মধ্যপ্রদেশ), আচানকমার-অমরকণ্টক (ছত্তীসগড়/মধ্যপ্রদেশ), আগস্ত্যমালাই (তামিলনাড়ু/কেরল), কাঞ্চনজঙ্ঘা (সিকিম) এবং এখন স্পিতি (হিমাচল প্রদেশ)।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও শান্ত পরিবেশের জন্য স্পিতি তুমুল জনপ্রিয়। উচ্চতা বেশি, দুর্গম পাহাড়ি রাস্তা হলেও মঠ, হ্রদ আর নির্জন গ্রামগুলোর টানে বহু মানুষ প্রতিবছর এই সময়টায় অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চের মধ্যে স্পিতি ঘুরতে যান। কীবর ও তাবো মঠ, চন্দ্রতাল লেক, পাইন ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক, কাজা ও কিবর গ্রামের মতো জায়গা ভ্রমণপিপাসুদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। আবার পরিষ্কার আকাশে তারাভরা রাত উপভোগের জন্যও স্পিতি ভ্যালি দেশের অন্যতম সেরা জায়গা।