ছবি ইন্টারনেট
আইনি পথেও আর রেহাই নেই। একপ্রকার অবশ্যম্ভাবী হয়ে গেল নগদকাণ্ডে অভিযুক্ত বিচারপতি যশবন্ত বর্মার অপসারণ। সুপ্রিম কোর্টের ৩ বিচারপতির কমিটির সুপারিশকে চ্যালেঞ্জ করে যে মামলা তিনি সুপ্রিম কোর্টে করেছিলেন, সেই মামলা খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত।
গত ১৪ মার্চ দিল্লি হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাংলোয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেই আগুন নেভাতে গিয়ে বিচারপতির বাড়ি থেকে উদ্ধার বিপুল পরিমাণ পোড়া নোট। ঘটনার পর বিচারপতি বর্মাকে বদলি করা হয় এলাহাবাদ হাই কোর্টে। নগদ উদ্ধার কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের ইন হাউস কমিটির তদন্ত শুরু করে। গঠিত হয় ৩ সদস্যের কমিটি। গত ৩ মে ওই অনুসন্ধান কমিটি একটি মুখবন্ধ রিপোর্ট জমা দেয় সুপ্রিম কোর্টে। দাবি করা হয়, বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণ পেয়েছে ওই তদন্ত কমিটি। সেই প্রমাণের ভিত্তিতেই ওই তদন্ত কমিটি বিচারপতি বর্মার অপসারণের সুপারিশ করেছে।
সুপ্রিম কোর্টের ওই সুপারিশের পর ওই কমিটির ক্ষমতা এবং যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দেন বিচারপতি বর্মা। সুপ্রিম কোর্টে তিনি দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে তদন্ত কমিটি তৈরি হয়েছে সেটা আইন মেনে হয়নি। তিনি বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগেই জনসমক্ষে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা, সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায় লঙ্ঘন করে। পালটা বিচারপতিরা প্রশ্ন তোলেন, যখন যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছিল, তখন কেন আপত্তি করা হয়নি? তাতে বিচারপতির আইনজীবী উত্তর দেন, উদ্ধার হওয়া নগদ অর্থ কার, তা জানার জন্য বিচারপতি বর্মা তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হয়েছিলেন। গত ৩০ জুলাই মামলার চূড়ান্ত শুনানিতে রায়দান স্থগিত রেখেছিল আদালত।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি বর্মার আবেদন খারিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত সাফ জানিয়ে দিল, বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে নিয়ম মেনেই তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছিল। সেই কমিটি নিয়ম মেনে তদন্ত করেছে। বিচারপতি বর্মা নিজেও সেই তদন্তে অংশ নিয়েছেন। তাছাড়া আবেদনকারীর সাংবিধানিক অধিকারও লঙ্ঘন করা হয়নি। সুপ্রিম কোর্ট এই আর্জি খারিজ করে দেওয়ায় বিচারপতি বর্মার কাছে আর কোনও আইনি পথ খোলা রইল না।